মঙ্গলবার, ৩০ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে ভাগনিকে খুন, আটক ৪

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে ভাগনিকে খুন, আটক ৪

৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে অন্তঃসত্ত্বা ভাগনিকে হত্যা করা হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছে এ খুনে সম্পৃক্ত চারজন। বিউটি খাতুন সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার ব্রাহ্মণগ্রামের সাচ্চু মিয়ার মেয়ে। পাঁচ বছর ক্লুলেস হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে সিরাজগঞ্জ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গ্রেফতাররা হলেন- এনায়েতপুর থানার ব্রাহ্মণগ্রামের আমির হোসেনের ছেলে স্বপন, জসিম উদ্দিনের ছেলে মমিন, মমিনের স্ত্রী আনু বেগম ও আবদুর রাজ্জাকের ছেলে ওমর ফারুক। সিরাজগঞ্জ পিবিআই পুলিশ সুপার রেজাউল করিম গতকাল সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। পুলিশ সুপার বলেন, ২০১৮ সালের ১৩ মে রাতে বিউটি তার ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। রাতে বিউটির মা কোমেলা প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে দেখেন মেয়ের ঘরের দরজা খোলা। তিনি বিউটিকে ডাকলে সাড়া-শব্দ পাননি। পরে চিৎকার দিলে পরিবারের সদস্যরা ঘরের আলো জ্বালিয়ে বিউটিকে মৃত পড়ে থাকতে দেখেন। এ ঘটনায় নিহতের বাবা সাচ্চু মিয়া পর দিন এনায়েতপুর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি দিয়ে হত্যা মামলা করেন। দীর্ঘদিন তদন্তের একপর্যায়ে ২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে ওমর ফারুককে গ্রেফতার করা হয়। ফারুকের দেওয়া তথ্যমতে ও প্রযুক্তিগত সহায়তায় ২৩ ও ২৫ মে রাতে আটক করা হয় তিনজনকে। তারা হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। আসামিরা বলেন, ২০১৪ সালে এনায়েতপুরের কোচগাঁও গ্রামের আবদুল্লাহর সঙ্গে বিউটির বিয়ে হয়।

তিন বছর পর স্বামীর সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়। এরপর তিনি বাবার বাড়িতে থাকতেন। বিউটির ছোট খালা আন্না মাদক ব্যবসা করতেন। অন্যদিকে স্বপন মাদকসেবী হওয়ায় মাঝে মধ্যে আন্নার বাড়িতে যাওয়া-আসা করত। সেই সুবাদে বিউটির সঙ্গে স্বপনের দেখা ও মোবাইলে কথা হতো। একপর্যায়ে স্বপন বিউটির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করেন। খালা আন্নার মাধ্যমে তাদের সম্পর্ক হয়। দুই মাস সম্পর্ক চলার পরে বিউটি বিয়ের জন্য স্বপনকে চাপ দেন। স্বপন বিবাহিত হওয়ায় বিউটিকে বিয়ে করতে রাজি হননি। তখন বিউটি স্বপনকে জানান তিনি অন্তঃসত্ত্বা। এরপর বিউটিকে হত্যার পরিকল্পনা করেন স্বপন। খালা আন্নার কাছে ভাগনিকে হত্যার প্রস্তাব দেয়। আন্না রাজি না হলে তাকে টাকার লোভ দেখায়। ৫০ হাজার টাকা আন্নাকে দিতে চায়। তখন আন্না তার আপন মেজো বোন আনু বেগমকে ২০ হাজার টাকা দিয়ে বিউটিকে হত্যায় সহায়তা করতে বলেন। আনু তার স্বামী মোমিনকে রাজি করায়। পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক ২০১৮ সালের ১৩ মে রাত ১১টার দিকে বিউটিদের বাড়ির পাশে সবাই একত্র হয়। পরে স্বপন, ওমর ফারুক, আনু, আন্না ও মোমিন বিউটির ঘরে ঢুকে ঘুমন্ত অবস্থা বিউটিকে হাত-পা ও মাথা চেপে ধরে মুখে বালিশচাঁপা দিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

সর্বশেষ খবর