সিঁদ কেটে চুরি অথবা অস্ত্র নিয়ে ডাকাতি নয়, হবিগঞ্জে এখন আতঙ্কের নাম স্প্রে পার্টি। চক্রের সদস্যরা ঘুমের মধ্যে অথবা কৌশলে খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক স্প্রে করে বাসাবাড়ির স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকাসহ মালামাল লুট করছে। পুলিশ সদস্য থেকে ব্যবসায়ী রেহাই মিলছে না কারোরই। শায়েস্তাগঞ্জ ও চুনারুঘাট উপজেলায় স্প্রে পার্টির সদস্যদের উপদ্রব বেশি। তাদের হাত থেকে রেহাই পেতে রাত জেগে অনেক এলাকায় পাহারা দিতে দেখা গেছে। সাধারণ মানুষের অভিযোগ, একের পর এক চেতনানাশক স্প্রে প্রয়োগ করে লুটপাটের ঘটনা ঘটলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। জানা যায়, গত ২০ জুলাই শায়েস্তাগঞ্জ পৌর এলাকার লেঞ্জাপাড়ায় একসঙ্গে চার পরিবারের সদস্যদের অচেতন করে মালামাল নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এরপর ২৮ জুলাই সদর উপজেলার বনদক্ষিণ গ্রামে এবং ৩ আগস্ট শায়েস্তাগঞ্জ পৌরের দক্ষিণ লেঞ্জাপাড়া এক বাসার জানালার গ্রিল কেটে ছয়জনের মুখমন্ডলে স্প্রে করে চার ভরি সোনাসহ মালামাল লুট করে। ১২ আগস্ট দিবাগত রাতে একই ডিবি পুলিশের এএসআই জুয়েল মিয়ার ভাড়া বাসায় চেতনানাশক স্প্রে করে পরিবারের লোকজনকে অজ্ঞান করে মোবাইল, নগদ টাকা নিয়ে যায় চক্রের সদস্যরা। ১৭ আগস্ট দিবাগত রাতে ব্যবসায়ী কামরুল হক চৌধুরীর পরিবারের সদস্যরা রাতের খাওয়া-দাওয়া শেষে ঘুমিয়ে পড়েন। ঘুমের মধ্যে তারা অচেতন হয়ে পড়লে রান্নার ঘরের পেছন দিয়ে স্প্রে পার্টি চক্রের সদস্যরা ঘরে প্রবেশ করে। লুটে নিয়ে যায় বাসায় থাকা নগদ ৫ লাখ টাকা ও ৫ ভরি স্বর্ণালংকার। স্থানীয়রা জানান, একের পর এক স্প্রে পার্টির সদস্যরা এমন কর্মকান্ড চালালেও ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা না থাকায় প্রতিনিয়ত এমন ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। এলাকাবাসী বলেন, পুলিশ সদস্যরা স্প্রে পার্টির কাউকে গ্রেফতার করতে না পারলেও রাত জেগে পাহারার সময় শায়েস্তাগঞ্জে চেতনানাশক স্প্রে ও উপকরণসহ একজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন তারা। হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলি জানান, স্প্রে পার্টি চক্রের সদস্যদের ধরতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে।
ইতোমধ্যে একজনকে আটক করে তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। আশাকরি দ্রুত স্প্রে পার্টির হোতাসহ সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।
