উত্তরের শস্যভান্ডারখ্যাত নওগাঁয় সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকলেও ৮-১০ দিনের ব্যবধানে খুচরা বাজারে চালের দাম প্রকারভেদে কেজিতে বেড়েছে ৫-৭ টাকা। যদিও মিল মালিকরা বলছেন, মৌসুমের শেষ সময়ে বাজারে পুরনো ধান সরবরাহ অনেকটা কমে যাওয়ায় চালের মজুদ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এ জন্য ধানের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে পাইকারি বাজারে চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের দাবি, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বাজারে নতুন ধান আসা শুরু হবে। তখন ধান এবং চালের দাম কিছুটা কমে যাবে।
জানা গেছে, পাইকারি বাজারে ৫০ কেজির প্রতি বস্তা কাটারিভোগ চাল ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ১০০, জিরাশাইল ২ হাজার ৯০০ থেকে ৩ হাজার, ব্রিআর-২৮ ও ২৯ জাতের চাল ২ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ৭০০, স্বর্ণা-৫ চাল ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে ৮-১০ দিন আগে প্রতি কেজি কাটারিভোগ ৫৭ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হলেও গতকাল ৬০ থেকে ৬৫, ৫৫ টাকার জিরাশাইল ৬০ থেকে ৬৪, ৫০ টাকার ব্রিআর-২৮ ও ২৯ চাল ৫২ থেকে ৫৫, ৪৭ টাকার স্বর্ণা ৫০ থেকে ৫৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
শহরের চকবাড়িয়া এলাকার দিনমজুর করিম উদ্দিন বলেন, ছয়জনের সংসারে একা আয় করি। মজুরির অর্ধেক শেষ হয়ে যায় চাল কিনতে। বাকি টাকা দিয়ে মাছ-তরকারি প্রয়োজন মতো কিনতে পারি না। এভাবে দাম বাড়লে পেট ভরে খেতে পারব না। শহরের দয়ালের মোড় এলাকার বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবী ছলিম উদ্দীন বলেন, বাজারে এসে দেখি চালের দাম বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা ইচ্ছা হলেই দাম বাড়াচ্ছে। সবকিছুর দাম বাড়লেও বেতন তো আর বাড়ছে না। বেতন যা পাই তাতে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। মেসার্স সুফিয়া অটোরাইস মিলের স্বত্বাধিকারী শফিকুল আলম বলেন, মিলে পর্যাপ্ত চাল মজুদ থাকলেও ক্রেতা কম। খুচরা বাজারে চালের দাম কেজিতে ৩-৪ টাকা বেড়েছে। পর্যাপ্ত চাল সরবরাহ থাকার পরও কেন দাম বাড়ছে তা জানা নেই। নওগাঁ পৌর ক্ষুদ্র চাল বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক উত্তম সরকার বলেন, বাজারে পর্যাপ্ত চাল সরবরাহ রয়েছে। পাইকারিতে বস্তা প্রতি প্রায় ১০০ টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে। সে কারণে খুচরা বাজারেও প্রভাব পড়েছে। নওগাঁ জেলা চালকল মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার বলেন, মৌসুমের শেষ সময়ে বাজারে পুরনো ধান সরবরাহ অনেকটা কমে যাওয়ায় চালের মজুদও প্রায় শেষ পর্যায়ে।
