ঝিনাইদহে ছয় মাস থানা হেফাজতে রাখা হয়েছিল বিশাল আকৃতির ১১টি ভারতীয় গরু। মঙ্গলবার ঝিনাইদহ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চত্বরে সেগুলো নিলামে বিক্রি করা হয়। সর্বোচ্চ ডাকে গরুগুলো কিনে নেন শৈলকুপার কাচেরকোল গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেন ও মির্জাপুরের শওকত হোসেন। তবে ছয় মাসে এসব গরুর খাবার বাবদ এ পর্যন্ত ১৩ লাখ ২৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক আবু সায়েম জানান, ২০২৩ সালের ২১ জুন গভীর রাতে মহেশপুর উপজেলার নাটীমা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অবৈধভাবে প্রবেশ করার সময় ভারতীয় ওই গরুগুলো আটক করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। সে সময় মহেশপুরের সুন্দরপুর গ্রামের চোরাকারবারি ফারুক হোসেন, সাদিসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছিল। এ ব্যাপারে মহেশপুর থানায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক পারভেজ কবির বাদী হয়ে মামলা করেন। আদালতের নির্দেশে তিন চোরাকারবারিকে কারাগারে পাঠানো হয়।
কিন্তু গরু নিয়ে বিপাকে পড়ে পুলিশ। পরে আদালতের কাছে নিলামের জন্য আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী।
গরুর মালিকানা দাবি করে আদালতে মামলা করেন দুই ব্যক্তি। পরে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মনোজ কুমারকে গরুগুলোর দায়িত্ব দেওয়া হয়। সদর থানা চত্বরেই একটি অস্থায়ী শেড নির্মাণ করেন তিনি। দুই রাখাল রেখে গরুগুলো দেখভাল করা হয়। ঝিনাইদহ চিফ জুডিশিয়াল আদালতে মালিক দাবিতে করা মামলায় হেরে যান জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আপিল করা ওই ব্যক্তিরা। সঠিক কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হয়ে জজ আদালতেও হেরে যান তারা। চলে যান উচ্চ আদালতে। হঠাৎ মামলা তুলে নেন ওই দুই ব্যক্তি।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক আবু সায়েম জানান, গরুগুলোর খাবার বাবদ এ পর্যন্ত ১৩ লাখ ২৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এর মধ্যে প্রাণিসম্পদ বিভাগ ১২ লাখ ৯৮ হাজার টাকা খরচ করেছে। বাকি ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে তার।
চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নাজির জিয়াউর রহমান জানান, নিয়ম মেনে আদালত চত্বরে প্রকাশ্য নিলামে ১১টি গরু বিক্রি করা হয়। যার মূল্য ১৯ লাখ ৫ হাজার টাকা। সরকারি মূল্য ধরা হয়েছিল প্রতিটি ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। ভ্যাট ও আইটিসহ ২১ লাখ ৪৩ হাজার ১২৫ টাকা। গরু পালন করতে যে টাকা খরচ হয়েছে, তা যাচাই-বাছাই করা হবে। এর পর খরচ বাদ দিয়ে বাকি টাকা সরকারের কোষাগারে জমা দেওয়া হবে।
