নারায়ণগঞ্জে বাড়ছে ডায়রিয়া। প্রতিদিনই জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ডায়রিয়া আক্রান্ত মানুষ শহরের জেনারেল হাসপাতালে (ভিক্টোরিয়া) ভর্তি হচ্ছেন। গত এক সপ্তাহে ৫ শতাধিক ডায়রিয়া রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে নারী ও শিশু সংখ্যা বেশি।
চিকিৎসকরা বলছেন, তীব্র গরম, জলবায়ু পরিবর্তন এবং বাইরের খাবার খাওয়ার কারণেই ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের ১০টি শয্যায় সব সময় রোগী ভর্তি থাকেন। দায়িত্বে থাকা নার্সরাও পার করছেন ব্যস্ত সময়। ডায়রিয়া আক্রান্ত যারাই আসছেন তাদের অবস্থা গুরুতর না হলে স্যালাইন পুশসহ প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
ইসদাইর এলাকার বাসিন্দা সজল রায় বলেন, হঠাৎ করেই আমার বাচ্চার পাতলা পায়খানা শুরু হয়। বাচ্চাটি দুর্বল হয়ে পড়েছে। তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে আসছি। তারা স্যালাইন দিয়েছে।
ডায়রিয়া ওয়ার্ডের ইনচার্জ সুলতানা আক্তার বলেন, প্রতিদিন প্রায় ৮০ থেকে ৯০ ডায়রিয়া রোগী এখানে আসছেন। এক সপ্তাহ ধরে এই সংখ্যাটা বেড়ে চলছে। আমাদের ধারণা গরম কিংবা পানির সমস্যার কারণে মানুষ ডায়রিয়া আক্রান্ত হচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কারণে আমাদের চাপ কিছুটা বেড়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় এ সংখ্যা অনেক কম। গত বছর আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছিল। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ওই রকম পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়নি।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক গোলাম মোস্তফা বলেন, গরম বাড়লে স্বাভাবিকভাবেই ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ে। তা ছাড়া এখন জলবায়ু পরিবর্তন, দূষিত পানি এবং বাইরের খাবারও ডায়রিয়া রোগের অন্যতম কারণ। আমি মনে করি এ সময়ে সবার উচিত ডায়রিয়া রোগ এড়াতে বিশুদ্ধ পানি ও স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া। জেলা সিভিল সার্জন ডা. মুশিউর রহমান বলেন, বর্তমানে ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীর চাপ বাড়লেও আমাদের যথেষ্ট জনবল রয়েছে। আশা করছি আগামীতে ডায়রিয়ার প্রকোপ তেমন বাড়বে না। আর বাড়লেও আমরা যথেষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।
তিনি আরও বলেন, বছরের এ সময় দিনে অনেক গরম থাকে আবার রাতের দিকে তাপমাত্রা কমে যাচ্ছে। খাবার গরম করে না খাওয়া, বাসী খাবার খাওয়া, ফুটপাতের খাবার খাওয়া, পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না পান করলে ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এসব বিষয়ে যদি সবাই সচেতন হয় তাহলে এক ব্যক্তির ডায়রিয়া হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়।