মাছের আঁশ এখন আর ফেলনা নয়। এই আঁশ দিয়ে রিচার্জেবল ব্যাটারির পাউডার, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, চোখের কৃত্রিম কর্নিয়া, বিভিন্ন ওষুধ, মাছ-মুরগির খাবার, নেইলপালিশ, লিপস্টিকসহ নানা প্রসাধনী তৈরি হচ্ছে। রোদে শুকানোর পর প্রতি টন বিক্রি হচ্ছে ৮৫ হাজার টাকায়। ফেলনা মাছের আঁশে নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন বগুড়ার ৩ শতাধিক মাছকাটা শ্রমিক। মাছের আঁশ বিক্রি করেই সুদিন ফিরিছে অনেকের।
বগুড়া শহর ও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে দেড় শতাধিক কাঁচাবাজার। এসব বাজারে প্রতিদিন প্রায় ২০০ মণের বেশি মাছ কেনাবেচা ও কাটা হয়। শহুরে অধিকাংশ মানুষ বাজার থেকে মাছ কিনে বাজারেই কাটিয়ে ঘরে নেন। মাছ কাটার শ্রমিকরা ফেলনা অংশ দিয়ে বাড়তি আয় করছেন। মাছের ভুঁড়ি, ফেলনা পাখনা, লেজ, কান বিভিন্ন প্রাণীর খাবার হিসেবে বিক্রি হয়। মাছের আঁশ কিনতে আসেন খুলনা ও ঢাকা থেকে। পাইকারদের কাছ থেকে আঁশ কিনেন তারা। বগুড়া থেকে মাসে প্রায় আড়াই টন করে মাছের আঁশ বিক্রি হয়। বগুড়া শহরের ফতেহ আলী বাজারের মাছ কাটা শ্রমিক পাগাড়ু জানান, তারা মাছের ফেলনা আঁশ প্রথমে জমিয়ে রাখেন। প্রতিদিন একজন মাছ কাটার শ্রমিক যে পরিমাণ আঁশ সংগ্রহ করেন তা ধুয়ে শুকিয়ে গড়ে ৩-৪ কেজি সংগ্রহ করতে পারেন। প্রতি কেজি শুকনো আঁশ বিক্রি হয় ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়।
বগুড়া শহরের কলোনি বাজারের পাইকারি বিক্রেতা জাহিদুল ইসলাম জানান, মাছের আঁশের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। বগুড়ার ফতেহ আলী বাজারে ২০-৩০ জন মাছ কাটেন প্রতিদিন। এ ছাড়া বিভিন্ন বাজার থেকে আরও মাছ কাটার শ্রমিকদের কাছ থেকে আঁশ সংগ্রহ করা হয়। এ আঁশ প্রথমে পানি দিয়ে ধুয়ে শুকানো হয় রোদে। ঢাকার কয়েকজন ক্রেতা আঁশ নিয়ে যান।
পাইকার আফজাল হোসেন জানান, চীন, জাপান, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ায় এই আঁশ বিক্রি করে থাকেন। সেখানে আঁশগুলো প্রক্রিয়াজাত করে রিচার্জেবল ব্যাটারির পাউডার, বৈদ্যুতিক জিনিসপত্র, চোখের কৃত্রিম কর্নিয়া, বিভিন্ন ধরনের ওষুধ, মাছ ও মুরগির খাবার, নেইলপালিশ, লিপস্টিকসহ নানা প্রসাধনীসামগ্রী তৈরিতে ব্যবহার হচ্ছে। মাছের আঁশ ডলার আয়ের পথ সৃষ্টি করেছে।