উজানের পাহাড়ি ঢল ও কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে দেশের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে নদনদীর পানি বেড়েছে। এরমধ্যে লালমনিরহাট তিস্তা ও মৌলভীবাজারে মনু, ধলাই, কুশিয়ারা ও জুড়ী নদীর পানি আশঙ্কাজনকহারে বেড়েছে। এরমধ্যে জুড়ী নদীর পানি বিপৎসীমার ১০২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার বলেন, উজানে ভারতের সিকিম ও উত্তরবঙ্গে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে তিস্তার পানি হঠাৎ করে বাড়তে শুরু করেছে। লালমনিরহাটসহ উত্তরের কয়েকটি জেলায় তিস্তা পাড়ের হাজারো মানুষ বন্যা নিয়ে শঙ্কায় আছেন। তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে পানির উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে গতকাল দুপুর ১২ টায় ৫১ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার। বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, আপাতত বন্যার আশঙ্কা নেই, তবে পরিস্থিতি দ্রুত পাল্টে যেতে পারে। তিস্তা নদীর পানি বাড়লে ক্ষতিগ্রস্ত হয় চরাঞ্চলগুলো। তিস্তাপাড়ে চর রয়েছে ৭৬টি। হাতীবান্ধা উপজেলার চর ডাউয়াবাড়ী এলাকার আনোয়ার হোসেন বলেন, বন্যা এলে সবকিছু শেষ হয়ে যায়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মাঠের ফসল, গরু-ছাগল, বাড়ির জিনিস সব ভেসে যায়। এবারও ভয়ে আছি।
সদরের চর রাজপুরের বাসিন্দা ওসমান আলী বলেন, আমরা খুব আতঙ্কে আছি ধীরে ধীরে পানি বাড়ছে, যে কোনো সময় ঘরবাড়িতে ঢুকতে পারে পানি। এছাড়া মৌলভীবাজারের চারটি প্রধান নদ- মনু, ধলাই, কুশিয়ারা ও জুড়ীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে আশঙ্কাজনক হারে। এরমধ্যে জুড়ী নদীর পানি বিপৎসীমার ১০২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শুক্রবার ভোর থেকে শুরু হওয়া ভারী বৃষ্টিপাত শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, জুড়ী নদীর পানি বিপৎসীমার ১০২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। মনু নদীর রেলওয়ে ব্রিজ পয়েন্টে পানি ২০২ সেন্টিমিটার, চাঁদনীঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯৮ সেন্টিমিটার নিচে, ধলাই নদীর রেলওয়ে ব্রিজে ২৫০ সেন্টিমিটার পানি রয়েছে, কুশিয়ারা নদী এখনো শেরপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ১২৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খালেদ বিন ওয়ালিদ বলেন, জুড়ী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে থাকলেও বাকি নদীগুলোর পানি এখনো নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আমরা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে আছি। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। যদি বৃষ্টি থেমে যায়, তাহলে দ্রুত পানি নেমে যাবে।মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. ইসরাইল হোসেন বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা প্রশাসন সর্বাত্মক প্রস্তুত রয়েছে।