জনবলসহ নানান সংকটে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হচ্ছে। সিজারিয়ান ও মাইনর অপারেশন দীর্ঘদিন বন্ধ রয়েছে। চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন রোগী ও স্বজনরা।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, খানসামার প্রায় আড়াই লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার অন্যতম আশ্রয়স্থল এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আউটডোরে প্রতিদিন ২৫০-৩০০ রোগী চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন। ইনডোরে ভর্তি থাকে গড়ে ৫০ রোগী। ২০২১ সালের জুলাইয়ে এ হাসপাতাল ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। তবে জনবল, যন্ত্রপাতি ও ওষুধ কিছুই বৃদ্ধি পায়নি। এখানে ৩১ শয্যার জনবলও নেই। যদিও রোগী দিনদিন বেড়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন, জনবল ও বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হলে সেবার মান আরও ভালো হবে।
হাসপাতালে দেখা গেছে, আউটডোরে রোগীদের দীর্ঘ লাইন। সেখানে রোগীদের দীর্ঘসময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। ৩১ শয্যার বরাদ্দ দিয়ে ৫০ শয্যার রোগীদের খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। খাদ্যের মান নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের জুলাইয়ে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করার প্রশাসনিক অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে জনবল, যন্ত্রপাতি ও ওষুধ কিছুই বৃদ্ধি পায়নি। এ হাসপাতালে ইনডোরে প্রতিনিয়ত গড়ে ৫০ রোগী ভর্তি থাকেন। আউটডোরে ২৫০-৩০০ রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। হাসপাতালের ১৫৬টি পদের বিপরীতে কর্মরত রয়েছেন ১১১জন। ৩১ শয্যার অনুমোদিত ১৬ চিকিৎসক পদে এখন আছেন আটজন। এর মধ্যে আবার গাইনি কনসালট্যান্ট ও ইউনানি চিকিৎসক অন্যত্র সংযুক্ত রয়েছেন। তৃতীয় শ্রেণির ৮২টি পদের বিপরীতে আছেন ৫৩ জন এবং চতুর্থ শ্রেণির ২১টি পদে কর্মরত ১১ জন।
হাসপাতালে সেবা নিতে আসা খানসামার ছাতিয়ানগড় গ্রামের আসাদ ইসলাম জানান, স্ত্রীকে চিকিৎসক দেখানোর জন্য সকালে টিকিট কেটে বসে আছি। দেড় থেকে দুই ঘণ্টা পর চিকিৎসককে দেখা পেয়েছি। উপায় নেই। রোগী বেশি, ডাক্তার কম এটাই বড় সমস্যা। সমাজকর্মী শাকিল খান বলেন, হাসপাতালে সাধারণ মানুষকে প্রতিনিয়ত বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে।
খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক (আরএমও) ডা. শামসুদ্দোহা মুকুল বলেন, সীমিত জনবল নিয়েও আমরা সহকর্মীদের আন্তরিকতায় রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। জনবল ও বরাদ্দ বৃদ্ধি পেলে সেবার মান আরও ভালো হবে।
খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শফিকুল ইসলাম বলেন, ৫০ শয্যার অনুমোদন থাকলেও এখনো ৩১ শয্যার জনবল দিয়েই কাজ চলছে। এর মধ্যেও জনবল সংকট রয়েছে। বিষয়টি নিরসনে নিয়মিত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।