কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার মির্জানগরের মীর আবদুল করীম কলেজে খেলার মাঠ দখল করে নদী ভাঙনরোধ প্রকল্পের ব্লক নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি খেলাধুলার সুযোগবঞ্চিত হচ্ছেন ২ শতাধিক শিক্ষার্থী ও এলাকার যুবসমাজ। এলাকাবাসী জানান, কলেজের ওই মাঠে একসময় প্রতিদিন বিকালে খেলায় মেতে উঠতেন কিশোর-যুবকরা। আশপাশের গ্রাম থেকেও এখানে বিভিন্ন দল খেলাধুলার জন্য আসত। কিন্তু ছয় মাসের বেশি হলো সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার শিশু-কিশোরদের এ খেলার মাঠ দখল করে হাজার হাজার ব্লক তৈরি করছেন।
সরেজমিন কলেজপ্রাঙ্গণে দেখা যায়, ইটপাথর ও সিমেন্ট-বালু দিয়ে বানানো ব্লকে উঁচু উঁচু ঢিবি তৈরি হয়েছে কলেজ মাঠে। মাঠের মাঝখানেই পড়ে আছে খোয়াভাঙা মেশিন। মাঠের এক কোনে একটি সাইন বোর্ড। তা দেখে জানা যায়, পদ্মা নদীর ভাঙন থেকে কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলাধীন তালবাড়ীয়া এবং কুমারখালী উপজেলাধীন শিলাইদহ ইউনিয়নের কোমরকান্দি রক্ষা শীর্ষক প্রকল্পের জন্য ব্লকগুলো তৈরি করা হচ্ছে। কলেজপ্রাঙ্গণে কীভাবে এ ব্লক বানানো হচ্ছে? কলেজ কর্তৃপক্ষেরই বা এতে কী লাভ- এ-সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আহসান উল হক খান চৌধুরী বলেন, কাজ শেষে হয়তোবা উনারা কলেজকে কিছু দেবেন। কিন্তু আপাতত আমরা মানবিক বিষয় মাথায় রেখে ব্লক তৈরির অনুমতি দিয়েছি। তিনি বলেন, পদ্মা ভাঙতে ভাঙতে কলেজের আঙিনায় চলে এসেছে। এসব ব্লক দিয়ে তো কলেজই রক্ষা করা হবে। সেসব বিষয় মাথায় রেখে বাচ্চাদের খেলার মাঠ জেনেও আমরা ব্লক নির্মাণের বিষয়ে কোনো আপত্তি করিনি। ঠিকাদার স্থানীয় এবং প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে এ বিষয়ে স্থানীয়দের কেউই কথা বলতে রাজি হননি। এ বিষয়ে ঠিকাদার সোহাগ ম ল বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা বলে আমরা সেখানে ব্লক বানাচ্ছি। নদী থেকে ২০০ মিটার দূর পর্যন্ত তারই জমি। সেই বিবেচনায় এটি কলেজের জমি হলেও নদীরও জমি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এভাবে কলেজের মাঠে ব্লক তৈরির কাজ করতে পারে কি না, জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ড কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কোথায় ব্লক তৈরি করছে সেটা আমাদের জানার কথা নয়। আমরা শুধু তাদের কাছ থেকে ব্লক বুঝে নেব। কলেজের বিষয়ে তিনি বলেন, ওই কলেজে ব্লক বানানো হচ্ছে কি না আমার জানা নেই। আর যদি হয়ও সেটা আমাকে কেউ জানায়নি। এ বিষয়ে মিরপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, কলেজ মাঠে এভাবে ব্লক বানানোর এখতিয়ার কারও থাকার কথা নয়। তার পরও সরেজমিন পরিদর্শন করে বিস্তারিত জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।