রেলওয়ের শহর সৈয়দপুর এখন ‘আবর্জনার শহরে’ পরিণত হয়েছে। পৌর শহরের প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাজার, পাড়া-মহল্লা সবখানেই ছড়িয়ে আছে ময়লার স্তূপ। নির্দিষ্ট কোনো ডাস্টবিন বা ডাম্পিং জোন না থাকায় পুরো শহরটাই যেন উন্মুক্ত ভাগাড়। পৌরসভার ১৫টি ওয়ার্ডে গৃহস্থালি, পয়ো ও বাজারের বর্জ্য মিলে প্রায় ১২০ স্থানে জমে থাকে ময়লা।
নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় পৌরসভার পরিকল্পনার ঘাটতি যেমন আছে, তেমনি নাগরিকদের সচেতনতারও অভাব রয়েছে। পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম জোরদার ও নির্ধারিত জায়গায় বর্জ্য ফেলার ব্যবস্থা না করলে এ সংকট আরও প্রকট হবে আশঙ্কা তাদের।
শহরের বাঙালীপুর নিয়ামতপাড়ার বাসিন্দা মোসলেম উদ্দিন বলেন, প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকার ময়লা আনসার ক্যাম্পের পাশে ফেলা হয়। দুই-তিন দিন পর পৌরসভার গাড়ি এসে এগুলো নিয়ে যায়। ময়লায় পড়ে থাকায় দুর্গন্ধে এ রাস্তায় চলাচল করতে হয় নাক চেপে। বৃষ্টির দিনে দুর্ভোগ আরও বাড়ে। ময়লার স্তূপ থেকে ছড়াচ্ছে রোগজীবাণু।
নতুন বাজারের বাসিন্দা সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ডাস্টবিন না থাকায় যার যেখানে ইচ্ছা ময়লা ফেলছে। শহরে ডাম্পিংয়ের ব্যবস্থা নেই। মশা-মাছি আর দুর্গন্ধে আমাদের জীবন এখন অতিষ্ঠ।
পৌরসভার কনজারভেন্সি ইনচার্জ মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ময়লা-আবর্জনা আমরা প্রতিদিন অপসারণের চেষ্টা করি। সকালে নিলে বিকালে আবার ময়লা জমে। তাছাড়া গাড়ি ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী সংকটের কারণে অনেক সময় সব আবর্জনা সরানো সম্ভব হয় না।’ পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর-ই-আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘জনবল সংকট ও ডাম্পিং জোন না থাকায় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আবর্জনা অপসারণ করা যাচ্ছে না। নির্দিষ্ট একটি ডাম্পিং জোন তৈরির চেষ্টা চলছে।’
পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, ৩৪ বর্গ কিলোমিটারের সৈয়দপুর শহরে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ মানুষের বাস। ১৯৫৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এ শহর প্রথম শ্রেণির পৌরসভার মর্যাদা অর্জন করেছে। তবু এখানে ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট স্থান নেই। প্রতিদিন গড়ে ৫০-৫৫ টন বর্জ্য জমে। অথচ পরিচ্ছন্নতাকর্মী আছেন মাত্র ৩০ জন। তিনটি পিকআপ দিয়ে ময়লা সরানো হয়। ফলে নিয়মিত সব ময়লা অপসারণ সম্ভব হয় না।