টাঙ্গাইলের নাগরপুরে সড়কে উন্নয়ন কাজ না করেই দীর্ঘ দিন ধরে ফেলে রেখেছে ঠিকাদার। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বারবার তাগিদ দিয়েও কাজে ফেরাতে পারেনি ঠিকাদারদের। এতে জনগণ চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। নাগরপুর-শাহজানী ভায়া গয়হাটা সড়কে মাটি খুঁড়ে কাজ শেষ না করে ঠিকাদার চলে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এলাকাবাসী। সূত্রে জানা যায়, জনগণের ভোগান্তি লাগবের জন্য সড়ক অবকাঠামো পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রায় ৯৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয় বরাদ্দে মেসার্স কৃষ্ণা স্টুডিও ও এমএস নাইস ট্রেডার্সকে কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সংস্কার কাজ ২ অক্টোবর ২০২৪ শুরু হয়ে ২০২৫ সালের ৩০ এপ্রিল শেষ হওয়ার কথা ছিল।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নাগরপুর-শাহজানী ভায়া গয়হাটা সড়কে বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি জমে সড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে যানবাহনসহ পথচারীদের চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে পড়ে। কাদাজল পেরিয়ে বিদ্যালয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা। রোগী ও তাদের স্বজনদের জন্য হাসপাতালে যাওয়া এখন এক প্রকার কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পল্লি সড়ক অবকাঠামো পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে টাঙ্গাইল নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে দুটি কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। এর মধ্যে মেসার্স কৃষ্ণা স্টুডিওকে ৪ হাজার ৫০০ মিটার থেকে ৮ হাজার ৬৮৫ মিটার পর্যন্ত মোট ৪.১৮৫ কিলোমিটার অংশের কাজ এবং এমএস নাইস ট্রেডার্সকে ০ থেকে ৪ হাজার ৫০০ মিটার পর্যন্ত মোট ৪.৫ কিলোমিটার অংশের কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়। দুই প্রতিষ্ঠানের মোট চুক্তিমূল্য প্রায় ৯৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সড়কের এক পাশের মাটি খুঁড়ে কাজ না করেই লাপাত্তা হন। ফলে সীমাহীন দুর্ভোগ ও অবর্ণনীয় কষ্টের মধ্যে পড়েছে এ সড়কের ছোট বড় যানবাহনসহ পথচারীরা। ইজিবাইক চালক আবুল বলেন, রাস্তার পাশে গর্ত করে রাখায় মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। ব্যবসায়ী আলিম মিয়া জানান, পণ্য পরিবহনের সময় ট্রাক-ভ্যান গর্তে আটকে যায়। সময়মতো পণ্য পৌঁছাতে পারছি না, ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। পশ্চিম দুয়াজানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভিজিট করতে আসা উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মীর সাইফুল ইসলাম বলেন, স্কুলের সামনে এভাবে গর্ত করে রাখায় অনেক সময় বৃষ্টির পানি জমে থাকে। যার ফলে ছোট ছোট শিশুদের বিদ্যালয়ে আসা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মো. তোরাপ আলী এ প্রসঙ্গে জানান, দীর্ঘ দিন কাজ ফেলে রাখায় জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হওয়ায় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের কার্যাদেশ বাতিল করা হয়। পড়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান উচ্চ আদালতে (হাই কোর্ট) রিট করেছেন। আমাদের পক্ষ থেকে আইনজীবী নিয়োগ করেছি। আইনি মোকাবিলার মাধ্যমে রিট খারিজ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। এর পর দ্রুত সময়ের মধ্যে ফের দরপত্র আহ্বান করা হবে বলেও তিনি জানান।