যশোরে শিবির সন্দেহে গণপিটুনীতে হাবিবুল্লাহ (২২) নামে এক কলেজ শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। সোমবার বিকেলের এই ঘটনায় আহত হয়েছেন কামরুল আহসান (২২) ও আল মামুন (২২) নামে আরও দুইজন। তাদেরকে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে আল মামুনের অবস্থা গুরুতর বলে ডাক্তাররা জানিয়েছেন।
নিহত হাবিবুল্লাহ শার্শা উপজেলার তেবাড়িয়া এলাকার নিয়ামত আলীর ছেলে। নিহত ও আহত তিনজনই যশোর এমএম কলেজের অর্থনীতি বিভাগের তৃতীয়বর্ষের ছাত্র। কলেজের পূর্ব পাশে ‘নির্ঝর’ নামে একটি মেসে তারা থাকতেন। আহত কামরুল আহসান বাঘারপাড়া উপজেলার ছোটখুদরা গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে এবং আল মামুন মাগুরার সীমাখালী উপজেলার আতিয়ার রহমানের ছেলে।
আহত আল-মামুন জানান, বিকেল ৩টার দিকে ৪/৫ জন লোক এসে তাদের তিনজনকে পাশের আশিক ছাত্রাবাসে নিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর আহত করে।
যশোর কোতোয়ালি থানার এএসআই আতাউর রহমান বলেন, ‘খবর পেয়ে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করি। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থা বিকেল সোয়া ৫টার দিকে মারা যান হাবিবুল্লাহ।’ তবে কারা পিটুনী দিয়েছে, সে ব্যাপারে কিছু বলতে পারেননি এএসআই আতাউর রহমান।
যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি শিকদার আককাস আলী বলেন, ‘গণপিটুনী দিয়ে ছাত্রলীগ কর্মীরা ওই তিনজনকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। তিনজনই শিবিরের কর্মী বলে শোনা যাচ্ছে। পরে সংশ্লিষ্ট ছাত্রাবাসে অভিযান চালিয়ে একটি ককটেল ও শিবিরের কিছু বইপত্র উদ্ধার করা হয়েছে।’
আহত কামরুলের মা আনোয়ারা বেগম বলেন, তার ছেলে কোন রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত ছিল না। তিনদিন বাড়িতে থেকে আজ সোমবার যশোর এসেছিল পরীক্ষা দেওয়ার জন্য।
তবে জেলা জামায়াতের একজন শীর্ষ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, নিহত ও আহতরা শিবিরের কর্মী। স্থানীয় ছাত্রলীগের কর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায়।
এদিকে, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুল ‘নির্ঝর’ নামের ছাত্রাবাসে হামলার সাথে ছাত্রলীগের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেন, শিবিরের মালিকানাধীন ওই মেসে প্রত্যেক শুক্রবার গোপন বৈঠক হতো। সেখানে নাশকতার পরিকল্পনা করা হতো। বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় লোকজন মেসটিতে হামলা চালায়। পরে স্থানীয় ছাত্রলীগের কর্মীরা তাদের উদ্ধার করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। স্থানীয় লোকজন মেসটি থেকে ককটেল ও শিবিরের বইপুস্তক উদ্ধার করেছে বলেও দাবি করেন বিপুল।
বিডি-প্রতিদিন/২৩ নভেম্বর, ২০১৫/মাহবুব