নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নওপাড়া গ্রামের ৪৭ গ্রাহকের কাছ থেকে পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়ার কথা বলে এক লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন এক যুবলীগ নেতা। খামে ভরে সেই টাকা গ্রাহকদের কাছে ফেরত দিলেন স্থানীয় সাংসদ অধ্যাপক আবদুল কুদ্দুস। গত শনিবার ওই গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ টাকা ফেরত দেওয়া হয়।
যুবলীগ নেতা ইউনুছ আলীর ঘুষ নেওয়া ও এমপি'র সেই টাকা ফেরত দেওয়ার ঘটনা এখন গ্রামবাসীর মুখে মুখে। নাটোরের গুরুদাসপুর ও বড়াইগ্রাম থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস এমপি ঘুষ নেওয়ার জন্য যুবলীগ নেতা ইউনুছ আলীকে প্রকাশ্যে ভৎসনা করেন। এছাড়া এলাকাবাসীকে তদবিরবাজদের কাছ থেকে দূরে থাকতে বলেন।
সাংসদ আবদুল কুদ্দুস জানান, ছয় মাস আগে ফেসবুক থেকে ঘুষ নেওয়ার ঘটনাটি আমি জানতে পারি। পরে আমি ওই যুবলীগ নেতাকে টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলাম। টাকা ফেরত না দিলে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে না বলেও সতর্ক করেছিলাম। টাকা ফেরতের অপেক্ষায় ছয় মাস বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া বন্ধ রাখা হয়। অবশেষে চাপের মুখে টাকা ফেরত দেন যুবলীগ নেতা। এরপর আমি ওই টাকা নিজ হাতে গ্রাহকদের কাছে হস্তান্তর করেছি।
নাটোর পল্লাী বিদ্যুৎ সমিতি-২ (বনপাড়া) ও গ্রামবাসী থেকে জানা গেছে, প্রায় ছয় মাস আগে উপজেলার চাপিলা ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য ইউনুছ আলী ও তাঁর কর্মীরা গুরুদাসপুর উপজেলার নওপাড়া গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য ৪৭ গ্রাহকের কাছ থেকে আড়াই হাজার টাকা করে ঘুষ আদায় করেন। এ খবর জানতে পেরে নাটোর-৪ আসনের সাংসদ আবদুল কুদ্দুস ওই যুবলীগ নেতাকে টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেন। এক পর্যায়ে ওই নেতা সাংসদের কাছে টাকাগুলো হস্তান্তর করেন। শনিবার গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন সাংসদ আবদুল কুদ্দুস। অনুষ্ঠানে একে একে ঘুষ দেওয়া গ্রাহকদের নাম ঘোষণা করা হয়। আর সাংসদ প্রত্যেকের কাছে খামে করে ঘুষের টাকা ফেরত দেন।
জানতে চাইলে নওপাড়া গ্রামের মনিরুজ্জামান, শেফালী খাতুন ও খোরশেদ আলীসহ অন্তত ১০ জন জানান , গত প্রায় ছয় মাস আগে উপজেলার নওপাড়া গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য ৪৭জন গ্রাহকের কাছ থেকে আড়াই হাজার টাকা করে ১ লাখ ১৭ হাজার ৫শ' টাকা ঘুষ আদায় করেন উপজেলার চাপিলা ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা ইউনুছ আলী।
ঘুষ আদায়কারীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে সাংসদ বলেন, বিষয়টি আলোচনা করে দেখব।
যোগাযোগ করা হলে যুবলীগ নেতা ইউনুছ আলী দাবি করেন, তিনি ওই টাকা বিদ্যুৎ কার্যালয়ে তদবির করার জন্য নিয়েছিলেন। তদবির বাবদ টাকা খরচ না হওয়ায় তা সাংসদের হাত দিয়ে ফেরত দেওয়া হয় ।
বিডি-প্রতিদিন/১৭ জানুয়ারি, ২০১৬/এস আহমেদ