দৌড়ের উপর সাংবাদিক সম্মেলন করল জেলা বিএনপি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাণ্ডব ঘটনা নিয়ে বিএনপি’র অবস্থান পরিষ্কার করতে এ সাংবাদিক সম্মেলন ডাকা হয়। জেলা বিএনপি’র সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি শহরের মৌড়াইলস্থ বাসভবনে বেলা ১১টার এ সাংবাদিক সম্মেলন আহ্বান করেন।
দলের পক্ষ থেকে সকল প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং স্থানীয় পত্রিকার সম্পাদকদের সংবাদ সম্মেলনের খবর কাভার করার জন্য আহ্বান জানানো হয়। তবে জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে সকালে সাংবাদিকদের জানানো হয় রাতেই সদর থানার নতুন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মঈনুর রহমান বিএনপি নেতাদের সংবাদ সম্মেলন বন্ধ করতে বলেন। অভিযান চালানো হয় বিএনপি’র সভাপতির বাসায়। সকালে দেখা গেল বাস্তবতা। সকাল থেকেই র্যাব-বিজিবিসহ বিপুল সংখ্যক পুলিশ হাফিজুর রহমান মোল্লাা কচির বাস ভবন ও আশপাশ এলাকা ঘিরে রাখে। নিয়োগ দেয়া হয় ২ জন ম্যাজিস্ট্রেট। সৃষ্ট পরিস্থিতিতে সরে যান বিএনপি নেতারা। পরে শহরের পাওয়ার হাউজ সড়কে দাঁড়িয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন জেলা বিএনপি’র নেতৃবৃন্দ।
লিখিত বক্তব্যে দলের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক খোকন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেন। এ ঘটনায় থানার সাবেক এএসপি তাপস রঞ্জন ঘোষ ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকুল চন্দ্র বিশ্বাসকে দায়ী করার পাশাপাশি অভিযোগ করেন, আসন্ন পৌর নির্বাচনে বিএনপি’র প্রার্থীকে মাঠ ছাড়া করতে তাদের নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তারা অভিযোগ করেন, ৭৭ দিন কারাভোগের পর বিএনপি নেতৃবৃন্দ এবং এখনো কারাবন্দি মাহমুদুর রহমান মাহিনকে কারাগারে থাকা অবস্থায় মামলায় আসামি করা হয়েছে।
সম্মেলনে তারা বলেন, সম্প্রতি ঘটনা ঘটে ঘটনা প্রবাহে বিএনপি’র কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। এতে জেলা বিএনপি নেতাদের সকল প্রকার হয়রানি বন্ধ, সমস্ত মিথ্যা ফরমায়েশি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত মামলা দায়েরের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তারা বলেন, শাসক দলের নেতৃবৃন্দ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিগত দিনের সকল রাজনৈতিক, সামাজিক ও পারস্পরিক সহমর্মিতা ও শ্রদ্ধাবোধের বন্ধনকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।
সম্মেলন শেষ করার পূর্বেই র্যাব-বিজিবি-পুলিশের বিশাল বহর ঘটনাস্থলে পৌছলে তারা দ্রুত ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যান। এসময় জেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, সাবেক যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান শাহিন, ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি ও কাউন্সির কাউসারসহ বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি’র সংবাদ সম্মেলনকে ঘিরে ১ প্লাটুন র্যাব, ৪ প্লাটুন বিজিবি ও বিপুল সংখ্যক পুলিশের টহল জোরদার করা হয়। এ ব্যাপারে দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেট রুহুল আমীন সাংবাদিকদের জানান, এটি অতিরিক্ত কিছু নয়। এটি নিয়মিত টহল। আইন শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রয়েছে।
এদিকে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সহিংসের ঘটনায় পুলিশ আরো একজনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃত মো. শাহেদ হোসেন সদর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক। পুলিশ জানায়, আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনের অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন ঘটনায় তার সংশিষ্টতা রয়েছে। এনিয়ে ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি ব্যাপক তদন্ত চলছে।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৮ জানুয়ারি, ২০১৬/ রশিদা