বাগেরহাটে সন্ত্রাসীদের নির্যাতনে দুই মাসের অন্তঃস্বত্তা এক গৃহবধূর রক্তক্ষরণে গর্ভপাত ঘটেছে। অসহ্য যন্ত্রণা আর রক্তক্ষরণ নিয়ে ডালিয়া নওশিন পূরবী নামে ওই নারী রবিবার বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়। এ ঘটনায় দুলাল আকন নামে এক সন্ত্রাসীসহ ৮ জনের নামে সোমবার রাতে বাগেরহাট মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে।
ডালিয়া নওশিন পূরবী নামে ওই গৃহবধূ রাতে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে জানান, সন্ত্রাসী দুলাল আকন তাঁদের প্রতিবেশী। দুলাল আকন বাড়ির পাশে একটি পুকুর পাড়ে তার সঙ্গীদের নিয়ে প্রায়ই বিভিন্ন ধরণের মাদকদ্রব্য সেবনসহ তাকে উত্যক্ত করতো। এমনকি তার ঘরে প্রবেশ করতে দরজায় এসে একাধিকবার কড়া নাড়িয়েছে। এ ঘটনায় সে প্রতিবাদ করলে দুলাল ও তার লোকজন তাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। শুক্রবার সন্ধ্যায় পূরবীরা বাড়ির সামনে স্থানীয় কয়েকজনে মিলে বনভোজনের আয়োজন করে। এসময় দুলালের গাছের একটি খেজুরপাতা নিয়ে রান্না করা হয়। এতে দুলাল ও তার পরিবারের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। এ নিয়ে দুলালের পরিবারের সঙ্গে তাদের ঝগড়াঝাটি হয়। শনিবার বিকালে সে তার স্বামীর সাথে মোটরসাইকেলযোগে বাড়িতে ফিরছিল। এসময়ে বাড়ির সামনে দুলাল ও তার লোকজন তাদের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে তার পেটের উপর লাথি ও কিলঘুষি মারে। এ ঘটনায় গুরুত্বর আহত হয়ে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তির পরপরই তার গর্ভপাত ঘটে।
কান্নাজড়িত কন্ঠে পূরবী আরও জানান, বিয়ের ৯ বছর পর তিনি অন্তঃস্বত্তা হয়েছিলেন। সন্ত্রাসীদের কারনে প্রথম সন্ত্রানটিকে পৃথিবীতে নিয়ে আসতে পারলেন না। একথা বলেই পূরবী জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
ডালিয়ার স্বামী মো. রিয়াজ মোর্শেদ অভিযোগ করে বলেন, দুলালের লোকজন এখন তাদের হুমকি দিচ্ছে। তিনি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। বিষয়টি রবিবার দুপুরে বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা আইন শৃংখলা কমিটির মিটিংয়ে উত্থাপিত হলে বাগেরহাট পুলিশ সুপার নিজামুল হক মোল্যা তাৎক্ষনিক বাগেরহাট মডেল থানার ওসিকে ভিকটিমের মামলা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
রবিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনায় সন্ত্রাসী দুলাল আকনসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা হয়েছে বলে বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান খান জানান।
বিডি-প্রতিদিন/০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/ এস আহমেদ