‘আমার স্বামী রাজবন্দি ছিল। শেখ হেলাল, খালেক তালুকদার জানে। শেখ হাসিনা আমাকে টাকা দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছে। আমি গোপালগঞ্জের মেয়ে। আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতে গিয়ে আমার স্বামী পঙ্গু হয়েছে। এর পরেও কেন আমার বাড়ি লুট ও ভাংচুর করলো আওয়ামী লীগের লোকেরা? একি বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ। আমাকে শেখ হাসিনার কাছে নিয়ে যাও।’ আজ রবিবার সকাল ৮টার দিকে এই কথাগুলো বলেছেন বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার গুয়াতলা গ্রামের আওয়ামী লীগ কর্মী দেলোয়ার তালুকদারের স্ত্রী পারুল বেগম।
চিৎকার করতে করতে তিনি আরো বলেন, তার বাড়িঘর ভাংচুর ও সকল মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে নৌকা মার্কার লোকেরা। ঘরের কাথা, বালিশও লুটপাট করে নিয়ে গেছে। সারারাত ঘুমোতে পারিনি। জীবন বাঁচাতে স্বামী সন্তানেরা পালিয়ে গেছে। আমার স্বামী আওয়ামী লীগ করে। আমি গোপালগঞ্জের মেয়ে। আমার বাড়ি প্রকাশ্য দিবালোকে লুট হলো কেন? এমন প্রশ্নও করেন পারুল বেগম।
গতকাল শনিবার সকালে গুয়াতলা গ্রামের কয়েকটি বাড়ি ও দোকান ভাংচুর করে নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুর রহিম বাচ্চুর কর্মী বাহিনী। লঠি মিছিল সহকারে তারা বেশকিছু বাড়ি ও দোকানে হামলা করে। এতে রেহাই পায়নি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও। অভিযোগ রয়েছে, ভাংচুর করেই ক্ষান্ত হয়নি এই বাহিনী। তারা সকল মালামাল নসিমনে তুলে নিয়ে গেছে। এ ঘটনার পরে ওই গ্রামের বহু পুরুষ লোক বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষে অভিযোগ দায়ের করার মতো কোনো লোক এখন এলাকায় নেই।
আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুর রহিম বাচ্চুকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছে এমন অভিযোগে নিশানবাড়িয়ায় এই ভাংচুর ও লুটের ঘটনা ঘটে। এ সম্পর্কে জানতে চাইলে নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আব্দুর রহিম বাচ্চু বলেন, তার কোনো কর্মী কারো বাড়ি বা দোকানে হামলা করেনি। থানার ওসি মো. রাশেদুল আলমও এমন অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘নিশানবাড়িয়ায় কোনো বাড়িঘর ভাংচুর হয়নি, পরিস্থিতি শান্ত আছে।’
বিডি-প্রতিদিন/১৩ মার্চ ২০১৬/শরীফ