সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগ কার্যালয় ও মন্দির ভাংচুর মামলায় আসামির নামের সাথে মিল থাকায় শহিদুল ইসলাম নামে আওয়ামী লীগ সমর্থক এক ভ্যান শ্রমিককে গ্রেফতারের পর কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দা ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
পুলিশ, দলীয় সূত্র ও স্থানীয়রা জানান, দেলোয়ার হোসেন সাঈদীকে চাঁদে দেখা গেছে এমন গুজবে ২০১৩ সালের ১১ মার্চে জামায়াত-বিএনপি কর্মীরা এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগ কার্যালয় ও কয়েকটি মন্দির ভাংচুর করে। এ ঘটনায় এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম সেরাজ বাদী হয়ে ৩৫৭জন নামীয়সহ আরও অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় ১৮১নং আসামি হিসেবে মন্ডলপাড়ার রোস্তম আলীর ছেলে জামায়াত কর্মী শহিদুল ইসলামকে (৩৫) উল্লেখ করা হয়। এরপর জামায়াত কর্মী শহিদুল ইসলাম আদালত থেকে জামিন নিয়ে মালয়েশিয়ায় চলে যায়। চূড়ান্ত প্রতিবেদনেও শহিদুল ইসলামের নাম উল্লেখ করা হয়। দীর্ঘদিন আদালতে হাজিরা না দেয়ায় শহিদুলের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেন। কিন্তু তাকে খুঁজে না পেয়ে নাম ও পিতার নামের সাথে মিল না থাকায় পুলিশ পার্শ্ববর্তী বেলকুচি উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের হতদরিদ্র ভ্যান শ্রমিক আওয়ামী লীগ সমর্থক শহিদুল ইসলামকে (৫৫) গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে।
এ ব্যাপারে আটক শহিদুলের স্ত্রী আছিয়া খাতুন জানান, প্রায় ২৫ বছর আগে প্রকৃত আসামি শহিদুলের বাড়ির কাছে স্বামীর বাড়ি ছিল। কিন্তু বিয়ের পর থেকে প্রায় ২৫ বছর ধরে আমরা বেলকুচি থানার দৌলতপুর গ্রামে বসবাস করছি। তিনি আরো জানান, স্বামীসহ আমরা সকলেই আওয়ামী লীগের সমর্থক।
এ বিষয়ে মামলার প্রকৃত আসামির স্ত্রী সাজেদা খাতুন জানান, স্বামী শহিদুল ইসলাম নিরাপরাধ হলেও তাকে মূর্তি ও আওয়ামী লীগ অফিস ভাংচুর মামলায় আসামি করা হয়। পরে হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে সিরাজগঞ্জ কোর্টে কয়েক দফা হাজিরাও দেন। দেড় বছর আগে তিনি মালয়েশিয়া চলে গেছেন।
বেলকুচি থানার দৌলতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রতিবেশী আলতাফ হোসেন মেম্বার জানান, আটক শহিদুল আওয়ামী লীগের কর্মী। ২৫ বছর যাবত সে বেলকুচিতে বসবাস করছে।
এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম সেরাজ জানান, বিষয়টি শুনেছি। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার সাথে কথা বলে সমাধানের চেষ্টা করা হবে।
এনায়েতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকরাম হোসেন জানান, মামলায় শহিদুল ইসলাম ও পিতা-রোস্তম আলী উল্লেখ করা হলেও চূড়ান্ত প্রতিবেদনে শহিদুল ইসলাম ওরফে বিডিআর উল্লেখ রয়েছে। আর যাকে আটক করা হয়েছে তার নামও শহিদুল ইসলাম ওরফে বিডিআর। এলাকায় লোকজনও তাকে বিডিআর বলে ডাকে। সবকিছু মিলে যাওয়ায় তাকে আটক করা হয়েছে। তাছাড়া শহিদুল নামে কেউ এই মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেবার পর জামিন নেয়নি। তবে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়ার আগে কেউ জামিন নিয়েছিল কিনা তা জানা নেই।
বিডি-প্রতিদিন/২৪ মার্চ ২০১৬/ এস আহমেদ