নজীরবিহীন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে টাঙ্গাইলের পাঁচ উপজেলায় দেড় লাখ একর বোরো ফসল সেচের অভাবে বিনষ্ট হচ্ছে। কষ্টের ফসল চিটা হয়ে ঝরে পড়ায় কৃষকরা চোখে জলে ভাসছে।
জানা যায়, টাঙ্গাইলের গোপালপুর, মধুপুর, ধনবাড়ি, ঘাটাইল ও ভূঞাপুর উপজেলায় আড়াই লাখ একরে বোরোর আবাদ হয়েছে। সেচের জন্য রয়েছে পল্লী বিদ্যুতের সাত হাজার গভীর ও অগভীর নলকূপ। ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। চাহিদা ৩৩ মেঘাওয়াট। জামালপুর ও টাঙ্গাইল পিডিবি সরবরাহ করা হয় ৬/৭ মেঘাওয়াট। কোনো কোনো দিন তিনচার মেঘাওয়াট।
ঘাটাইল জিবিজি কলেজের উপাধ্যক্ষ মতিউর রহমান জানান, তিনি সমবায় সমিতির ভিত্তিতে একটি গভীর ও দুটি অগভীর নলকূপ পরিচালনা করেন। টানা দুই সপ্তাহ ধরে পল্লী বিদ্যুৎ ২৪ ঘন্টায় গড়ে এক দেড় ঘন্টার বেশি বিদ্যুৎ দেয়নি। ওই বিদ্যুতে ভোল্টেজ না থাকায় সেচ পাম্পের মোটর ঘুরেনা। ফলে সেচ কাজ একদম বন্ধ রয়েছে। এমতাবস্থায় সেচের অভাবে স্কীমের তিন চতুর্থাংশ বোরো ধান পুড়ে গেছে। শীষের কাঁচা ধানের দুধ শুকিয়ে চিটা হয়ে যাচ্ছে। কষ্টের ফসল সেচ সংকটে পুড়ে যাওয়ায় কৃষকরা ক্ষেতের আইলে বসে চোখের জলে ভাসছে। একই অবস্থা গোপালপুর, ধনবাড়ি ও মধুপুর উপজেলার নগদাশিমলা, হাদিরা, ঝাওয়াইল, আলমনগর, ধোপাকান্দি, বলিভদ্র, মুশুদ্দী, ধোপাখালি, গোলাবাড়ি, আউশনারা, আলোকদিয়া ও মির্জাবাড়ি ইউনিয়নের চার শতাধিক গ্রামের।
শুক্রবার সরেজমিন ঘুরে দেখা পান শত শত নলকূপ বিদ্যুতের অভাবে টানা পাঁচ সাতদিন ধরে অচল। বিদ্যুৎ সংকটের পাশাপাশি বিষ ফোড়া হয়ে দেখা দিয়েছে ডিজেল সংকট। কৃষকরা সরকার নির্ধারিত দামে ডিজেল পাচ্ছেনা।
গোপালপুর উপজেলা কৃষি অফিস ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানায়, বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি না ঘটলে বোরো উৎপাদন হুমকির মুখে পড়বে। কৃষকরা সর্বশান্ত হয়ে পড়বে। পল্লী বিদ্যুতের গোপালপুর জোনাল ম্যানেজার নজরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, তিন সপ্তাহ ধরে চাহিদার এক চতুর্থাংশ বিদ্যুৎ সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছেনা। ফসল ক্ষতিগস্ত হলেও তাদের করণীয় কিছু নেই।
বিডি-প্রতিদিন/ ২৯ এপ্রিল ১৬/ সালাহ উদ্দীন