ধানের নায্যমূল্য না পাওয়া এবং সেচ সংকটের কারণে মসুর চাষে ঝুঁকছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের বরেন্দ্র অঞ্চলের নাচোল উপজেলার কৃষকরা।
চলতি মৌসুমে নাচোল উপজেলায় ৯০ হেক্টর জমিতে মসুর চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও তা দশগুণ বেড়ে ৯৯০ হেক্টরে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে এবার মসুরের বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকদের চোখেমুখে খুশির ঝিলিক দেখা যাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, নাচোল উপজেলায় কয়েক বছর ধরে অল্পবিস্তর চাষ করে লাভবান হওয়ায় এবারে অনেক কৃষক মসুর চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। চলতি মৌসুমে উপজেলার ৯০ হেক্টর জমিতে মসুর চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও তা আশাতীত বেড়ে ৯৯০ হেক্টরে দাঁড়িয়েছে। এবার আবহাওয়া অনুকূল থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে। বর্তমানে কৃষকরা মসুর ঘরে তোলায় ব্যস্ত দিন পার করছেন।
কৃষকরা জানান, বরেন্দ্র অঞ্চলে ধান উত্পাদনে প্রধান অন্তরায় সেচ সংকট। এছাড়া ধান উৎপাদনে খরচ বেশি হওয়ায় কৃষকরা কুলিয়ে উঠতে না পারায় বিকল্প এবং লাভজনক হিসেবে মসুর চাষে ঝুঁকে পড়েছেন।
নাচোল সদর ইউনিয়নের সূর্যপুর গ্রামের কৃষক একরামুল হক জানান, গতবছর পরীক্ষামূলক ১০ কাঠা জমিতে তিনি মসুর আবাদ করেন। খরচ বাদ দিয়ে লাভ ভালোই হয়েছিল। তাই এবার তিনি ৪ বিঘা জমিতে মসুর চাষ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। বিঘা প্রতি সাড়ে ৬ মণ করে মসুর পেয়েছেন তিনি।
উপজেলার কসবা ইউনিয়নের চৌপুকুরিয়া গ্রামের কৃষক মাইনুল ইসলাম ১১ বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করতেন। এবার তিনি পরীক্ষামূলকভাবে ৩ বিঘা জমিতে মসুর চাষ করেছেন। এজন্য সবমিলিয়ে তার খরচ পড়েছে প্রায় ৪ হাজার টাকা। ৩ বিঘা জমি থেকে সব বাদ দিয়ে ১২ মণ মসুর পাবার আশা করছেন তিনি।
বর্তমানে মসুর বিক্রি হচ্ছে ৩২শ' থেকে ৩৮শ' টাকা মণ দরে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সত্যেন কুমার জানান, বরেন্দ্র অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা পানি সংকট। ধান উৎপাদনে প্রচুর সেচ লাগে। সে তুলনায় মসুরে সেচ লাগে না বললেই চলে। তাই কৃষি অফিস ও বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) যৌথভাবে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মসুর চাষে উদ্বুদ্ধ করছে এবং ভালো সাড়াও পাওয়া যাচ্ছে।
বিডি-প্রতিদিন/২ মে ২০১৬/শরীফ