নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগে অভিযুক্ত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের একজন শিক্ষককে সহকারী প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামীকাল মঙ্গলবার এ বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গেছে। ওই শিক্ষকের নাম রুহুল আমিন। নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগে অভিযুক্ত শিক্ষককে সহকারী প্রক্টর করার সিদ্ধান্তে ক্যাম্পাসে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাদের মাঝে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, দুই সহকারী প্রক্টরের মেয়াদ শেষ হওয়ায় রবিবার নতুন দুই সহকারী প্রক্টর নিয়োগের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামীকাল মঙ্গলবার এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। জানা গেছে, নতুন সহকারী প্রক্টর হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুহুল আমীনের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। আগামীকাল এ বিষয়ে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দেওয়া হবে। কিন্তু সহকারী অধ্যাপক রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে বিভাগের একাধিক ছাত্রীদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন ও নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে ভালো ফলাফলের প্রলোভন দেখিয়ে তিনি ছাত্রীদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসেরও অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগে অভিযুক্ত শিক্ষককে সহকারী প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এমন শিক্ষককে সহকারী প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ দিলে তারা আন্দোলনে যাবারও হুমকি দিয়েছেন।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্রী বলেন, প্রক্টর বা সহকারী প্রক্টরের দায়িত্ব হল ক্যাম্পাসের ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তা দেবার ব্যবস্থা করা। তবে যে শিক্ষকের কাছে ছাত্রীরাই নিরাপদ নন, তিনি কিভাবে ক্যাম্পাসে সকলের নিরাপত্তা দিবেন। চারিত্রিকভাবে দুর্বল এ শিক্ষককে সহকারী প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ দিলে আমরা ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আন্দোলনে যাব। অচিরেই এই সিদ্ধান্ত পরিহার করার জন্য তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবি জানান।
এদিকে নারী কেলেঙ্কারির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত সঞ্জয় কুমার নামে আরেক শিক্ষককে খালেদা জিয়া হলের আবাসিক শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এনিয়ে ছাত্রীদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মাহবুবর রহমানের সাথে এই শিক্ষকদের দহরম-মহরম সম্পর্ক থাকায় তাদেরকে গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান বলেন, ‘ক্যাম্পাস পরিচালনা করতে কাছের লোকের প্রয়োজন। তাই তাদের বিষয়ে সুপারিশ করা হয়েছে। তবে বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন, এখনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি।’
ভিসি প্রফেসর ড. আবদুল হাকিম সরকার বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে এ বিষয়ে প্রক্টর ভালো বলতে পারবেন। তার সুপারিশ পেয়েই এটা করা হয়েছে।’
বিডি-প্রতিদিন/০২ মে, ২০১৬/মাহবুব