ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে কৃষকের নামে গোপনে ব্যবসায়ি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে খাদ্যগুদামে গম ক্রয়ের অভিযোগ উঠেছে খাদ্য বিভাগের বিরুদ্ধে।
সোমবার পৌর এলাকার কৃষকের নামে ট্রাকে করে প্রায় দেড়শ মেট্রিক টন গম ক্রয় করেছে খাদ্য বিভাগ। এতে গমের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হয়েছে সাধারণ কৃষক। তবে এ অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবী ক্রয় কমিটির।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবার পীরগঞ্জ উপজেলায় ২৮ টাকা কেজি দরে কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ৬ হাজার ৫৪ মেট্রিক টন গম সংগ্রহ করার জন্য এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে নির্দেশনা আসে। এতে বলা হয় ব্যাপক প্রচারের মাধ্যমে প্রকৃত কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি গম ক্রয় করতে হবে। এ খবরে কৃষকের মনে কিছুটা আশার সঞ্চার হলেও বাস্তবে তার কোন প্রতিফলন ঘটেনি। কারণ বাজারে ঐ সময় প্রতি কেজি গমের দাম ছিল ১৬/১৭ টাকা। গুদামে গম বিক্রি করার আশায় প্রহর গুনতে থাকে কৃষক। কিন্তু তাদের সে আশা পরিণত হয় হতাশায়।
জানা যায়, কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি গম ক্রয় করা হলে খাদ্য বিভাগ তেমন লাভবান হতে পারবে না। এ জন্যই কৌশলে কৃষকের কাছ থেকে সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু করতে বিলম্ব করে কর্তৃপক্ষ। এদিকে বোরো ধানের খরচ যোগাতে বাধ্য হয়েই কৃষক ১৬/১৭ টাকা দরে বাজারে গম বিক্রি করে। এরই মধ্যে ব্যসায়ী সিন্ডিকেটের সাথে আতাত করে গম ক্রয়ের নীল নকশা করে খাদ্য বিভাগ। গোপন সূত্রে জানা গেছে, এতে চুক্তি হয় বর্তমান বাজার মূল্যের চেয়ে সরকারী অতিরিক্ত মূল্যের টাকা অর্ধেক অর্ধেক হারে ভাগবাটোয়ারার। দফায় দফায় সভা করে এ কৌশল নির্ধারণ করা হয়।
গত ১ সপ্তাহ ধরে চলে কৃষকের কৃষি কার্ড সংগ্রহের অভিযান। সব ঠিক ঠাক করেই কোন রকম প্রচার ছাড়াই হঠাৎ করে সোমবার ক্রয়ের উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী দিনে পৌরসভার কৃষকের নামে ট্রাকে করে খাদ্যগুদামে গম আনে ঐ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। তাদের কাছ থেকে প্রায় দেড়শ টন গম ক্রয় করে কর্তৃপক্ষ। পর্যায়ক্রমে একই নিয়মে বাকি গম কেনা হবে বলেও জানা গেছে।
সুত্র জানায়, প্রতি কৃষক গুদামে সর্বোচ্চ ২ টন গম বিক্রি করতে পারবে। অথচ সিন্ডিকেটটি ট্রাকে করে গম এনে কৃষকের নামে প্রকাশ্যে খাদ্যগুদামে গম বিক্রি করলেও এ যেন মগের মুল্লুক। দেখার কেউ নেই।
এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা নুর ইসলাম জানান, কয়েকবার সভা করে সংসদ সদস্যের পরামর্শক্রমে গম কেনা হচ্ছে। ভারপ্রাপ্ত গুদাম কর্মকর্তা যাচাই বাছাই করে গম কিনছেন। কোন অনিয়মের অভিযোগ তিনি পাননি।
ভারপ্রাপ্ত খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা শাহিন রানা বলেন, আপনাদের সাথে পরে দেখা করে নেব। লেখালেখি করে কি হবে।
ক্রয় কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, নিয়ম অনুযায়ী গম সংগ্রহ করা হচ্ছে। কোন অনিয়ম হয়নি। আর যদি হয়ে থাকে তাহলে সেটা দেখভাল করবেন খাদ্য বিভাগের লোকজন।
বিডি-প্রতিদিন/ ১০ মে ১৬/ হিমেল-০৭