শরীয়তপুরে বন্যার পানিতে ৯০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। গ্রামগুলোর ১১০টি বিদ্যালয়ের মাঠে ও শ্রেণীকক্ষে পানি প্রবেশ করার কারনে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া বন্যায় ভাঙ্গনের কারণে জেলার তিনটি উপজেলার ৩৬৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে একটি স্কুল ও মসজিদ। এ কারণে প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর পাঠ দান বন্ধ রয়েছে। এসব সমাধানে কৃর্তিপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করেবেন এমনটাই আসা করছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় ও স্থানীয় সূত্র জানায়, পদ্মার পানি বৃদ্ধি পেয়ে গত ২৮ জুলাই থেকে শরীয়তপুরের বিভিন্ন গ্রামে বন্যার পানি প্রবেশ করতে থাকে। বন্যার পানি বিদ্যালয়ের মাঠে ও শ্রেণী কক্ষে প্রবেশ করার করণে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার ৭১টি, নড়িয়া উপজেলার ২২টি, সদর উপজেলার ১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া নড়িয়ার দুইটি উচ্চ বিদ্যালয় ও জাজিরার পাঁচটি উচ্চ বিদ্যালয়ের কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে।
সারা বাংলাদেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল বৃহস্পতিবার থেকে। বিদ্যালয়ে বন্যার পানি ওঠার কারণে প্রাথমিক শিক্ষারর মহা পরিচালকের কার্যালয়ের নির্দেশে শরীয়তপুরের নড়িয়া, জাজিরা ও শরীয়তপুর সদর উপজেলার ৩৬৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
শরীয়তপুর সদর, নড়িয়া ও জাজিরা উপজেলার ১৫টি প্রাথমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেছে, বিদ্যালয়গুলোতে যাওয়ার সড়ক, বিদ্যালয়ের মাঠ ও শ্রেণীকক্ষ পানিতে তলিয়ে গেছে। কক্ষের ভিতর আসবাবপত্রগুলো পানিতে নষ্ট হচ্ছে। বিদ্যালয়ের প্রতিটি কক্ষ তালাবদ্ধ রয়েছে।
নড়িয়া উপজেলার চর নড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমা আক্তার বলেন, বিদ্যালয়টির মাঠ ও শ্রেণী কক্ষগুলো এক সপ্তাহ যাবৎ পানির নীচে। বাধ্য হয়ে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম বন্ধ করতে হয়েছে। নদীর পানি কমার সাথে সাথে বিদ্যালয় ভবনটি ভাঙ্গনের আশঙ্কা করছি।
শরীয়তপুর সদর উপজেলার পৌর এলাকার তিন নম্বর ওয়ার্ডের শরীয়তপুর সদর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আয়শা আক্তার বলেন, বিদ্যালয়ের মাঠ পানিতে তলিয়ে গেছে। বিদ্যালয়ের আশপাশের সকল এলাকা পানির নীচে। অনেক শিশুরা বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ করে দিয়েছে, অনেক শিশু পানির মধ্য দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে আসছে। প্রথম সাময়িক পরীক্ষা নেয়ার জন্য বিদ্যালয়টি খোলা রাখা হয়েছে। এখন জানতে পারলাম পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
নড়িয়া উপজেলার কেদারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরসাঈদ পলাশ বলেন, বিদ্যালয়ে আসার সকল সড়ক বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এক সপ্তাহ যাবৎ বিদ্যালয়ের মাঠে পানি। শ্রেণীকক্ষে পানি ওঠায় বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
শরীয়তপুরের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, বন্যায় গ্রাম তলিয়ে যাওয়ায় অনেক বিদ্যালয়ের শ্রেণী কক্ষে পানি প্রবেশ করেছে। এ কারণে ১০৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। বন্যার কারণে তিন উপজেলার ৩৬৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। স্থানীয় জেলা প্রশাসনের তদারকিতে বন্যার পর স্থগিত বিদ্যালয়গুলোর পরীক্ষা নেয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/০৫ আগষ্ট ২০১৬/হিমেল-২১