ভোগান্তির শেষ ছিল না টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার পেনশনভোগীদের। পেনশনের টাকা তুলতে এসে উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের সামনে সকাল-সন্ধ্যা অপেক্ষা করতে হত। এ সময় এদিক-সেদিক ঘুরে-ফিরে, গাছ তলায় বসে কিংবা হিসাবরক্ষণ অফিসের বারান্দায় ছোট্ট ব্রেঞ্চে বসে ক্লান্ত সময় ব্যয় করতো পেনশনভোগীরা। পানির পিপাসা আর ক্লান্তি সাথে অপেক্ষায় প্রহর গুনতো তারা। ছিল না ওয়াশরুমের সুবিধা।
এবার সেই পেনশনারদের সকল ভোগান্তি দূর হয়েছে উপজেলা প্রশাসনের একটি সিদ্ধান্তে। উপজেলা পরিষদের পুরাতন মিলনায়তন ভবনটি পেনশনারদের জন্য বিশ্রামাগার করায় পেনশনারদের ভোগান্তি অনেকটাই কেটে গেছে।
জানা যায়, উপজেলা পরিষদের জন্য নতুন কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ করায় পুরাতন ভবনের অডিটরিয়ামটি পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল। অডিটরিয়াম হিসাবরক্ষণ অফিস সংলগ্ন পরিত্যাক্ত অবস্থায় তালাবদ্ধভাবে পড়ে ছিল একটি ওয়াশরুমও। উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে পুরাতন অডিটরিয়ামটি সংস্কার করে তৈরি করা হয়েছে পেনশনারদের জন্য বিশ্রামাগার। বিশ্রামগারে নতুন এবং পুরাতন বৈদ্যুতিক সিলিং পাখা স্থাপন করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক বৈদ্যুতিক বাতি সংযোজন করা হয়েছে। বিশ্রামগারের জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশন ১০০টি নতুন চেয়ার প্রদান করেছে। সেই সাথে পেনশনারদের জন্য খাবার পানির জন্য ওয়াটার ফিল্টার-এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। রয়েছে সংবাদপত্রের জন্য স্ট্যান্ড, সেলফসহ বই/ম্যাগাজিন-এর ব্যবস্থা। পুরাতন ওয়াশরুমটি প্রয়োজনীয় সংস্কার করে ব্যবহার উপযোগী করে পেশনারদের ব্যাবহারের জন্য বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মেডিক্যাল চেক-আপ-এর জন্য উপজেলা হেল্থ কমপ্লেক্স এর ব্যবস্থাপনায় বেডসহ প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানের ব্যবস্থা রয়েছে বিশ্রামাগারে। পাশাপাশি বিশ্রামগারটি তদারকির জন্য সারাক্ষণ উপজেলা পরিষদের একজন অফিস সহায়ক নিয়োজিত করা হয়েছে।
প্রশাসনের এ উদ্যোগ সম্পর্কে পেনশনভোগী মো. ওমর আলী বলেন, আমাদের জন্য যে সুন্দর ব্যবস্থা হয়েছে এতে আমাদের আগের অসহনীয় দুর্ভোগ কেটে গেছে, এ জন্য আমি স্থানীয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই। বিশ্রামগারে চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ঔষধ প্রদানের ব্যবস্থা করার দাবিও জানান ওমর আলী।
এ বিষয়ে ঘাটাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কাশেম মুহাম্মদ শাহীন বলেন, মাননীয় মন্ত্রিপরিষদ সচিব মহোদয়ের টাঙ্গাইল জেলা সফরের পর জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশনা মতে আমরা পাবলিক সার্ভিস ইনোভেশন বিষয়টি নিয়ে ভাবতে শুরু করি। এ বিষয় নিয়ে সব দপ্তরের কর্মকর্তাগণ উপজেলা ইনোভেশন কমিটির সভা করে “পেনশনারদের জন্য বিশ্রামাগার” ব্যবস্থাকরণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণকরা হয়। ভবিষৎতে অন্যান সুযোগ সুবিধাসহ টেলিভিশন সুবিধা ও ইনডোর খেলাধুলা (লুডু, দাবা, ক্যারম ইত্যাদির)-এর ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান তিনি।
বিডি প্রতিদিন/০৮ নভেম্বর ২০১৬/হিমেল-০৮