কথা বলতে পারেন না। শ্রবণশক্তিও নেই তার। তবে এত সব প্রতিবন্ধকতাও দমাতে পারেনি শিখামনিকে। অন্য আর পাঁচটি স্বাভাবিক শিশুর মতোই সে। কীভাবে শিখামনি পড়া লেখা শিখে এ পর্যন্ত এসেছে এতে বিস্মিত হয় সবাই।
রৌমারী উপজেলার হাসানাবাদ দাখিল মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী শিখা। শিক্ষকরাই তাকে বর্ণমালা শিখিয়েছেন। শিখামনি এবার জেডিসি পরীক্ষা দিচ্ছে। পরীক্ষা কেন্দ্রের সুপার আহমদ উল্ল্যাহ বলেন, শিখা অত্যন্ত মেধাবী। হাতের ইশারায় সব কিছু বুঝে নেয়। বাকিটা বোর্ডে লিখে দিতে হয়। শিক্ষকরা একটু বেশি যত্ন নেয়ায় শিখতে পারছে সে। সব শিক্ষকই শিখার প্রতি আন্তরিক। এটাই শিখার এ পর্যন্ত আসার রহস্য।
শিখার পিতা আব্দুস সালাম পেশায় কৃষক। শিখাই তার বড় সন্তান। তিনি জানান, ও যে বাক প্রতিবন্ধী ও শ্রবণশক্তিহীন, এটা মানতে রাজি নয়। ছোট থেকেই লেখাপড়ার দিকে প্রচন্ড ঝোঁক। প্রথম প্রথম ভেবেছিলাম পড়ালেখা ওর ভাগ্যে নেই। কিন্তু সে ধারণা পাল্টে গেছে আমার। এখন ভাবছি যত কষ্টই হোক লেখাপড়া করিয়েই ওকে বড় দেখতে চাই।
কিছু জানতে চাইলে শিখা ইশারায় উত্তর দেয়। না বুঝলে খাতায় লিখে দেয়। শিখার একটাই চাওয়া, অনেক অনেক পড়ালেখা করবে সে। ছোট দুই ভাইকে পড়াবে। যাতে মানুষ তাকে প্রতিবন্ধী বলে দমিয়ে রাখতে না পারে। শিখা ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করতে চায়।
জেডিসি পরীক্ষার কেন্দ্র সচিব মাওলানা মোকসেদ আলী বলেন, অন্য পরীক্ষার্থীদের মতই শিখা স্বাভাবিক। তবে অন্যদের মতো 'দুষ্ট' নয়। পরীক্ষার সময় এক মনে লিখে যায়। কোন অসদুপায়ের চেষ্টাও করে না। শিখা আমাদের কাছে 'বিস্ময়' ব্যক্তিত্ব।
বিডি প্রতিদিন/১০ নভেম্বর, ২০১৬/ফারজানা