দিনাজপুরের পার্বতীপুরে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিকরা ৬০ ঘণ্টা পর তাদের অবস্থান ধর্মঘট স্থগিত করেছে। চাকরি স্থায়ীকরণসহ অন্যান্য দাবি বিবেচনার আশ্বাসের প্রেক্ষিতে তারা এ ধর্মঘট স্থগিত করেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে খনি ভূ-গর্ভের ১২০০ থেকে ১৪০০ ফুট নিচে অবস্থানকারী ধর্মঘটকারী ২৮৫ শ্রমিককে উপরে নিয়ে আসা হয়।
এর আগে কয়লা খনির সভাকক্ষে বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মীর মো. খায়রুল আলমের মধ্যস্থতায় পেট্রোবাংলা, খনি কর্তৃপক্ষ ও আন্দোলনকারী শ্রমিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান জানান, বুধবার খনি কর্তৃপক্ষ নিজ খরচে শ্রমিক নেতৃবৃন্দসহ ৫০ জন শ্রমিককে ঢাকা নিয়ে যাবে। সেখানে চাকরি স্থায়ীকরণের বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবং পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান আবুল মনসুর মো. ফয়জুল্লাহসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে।
বৈঠকে শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ীকরণের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে বলে দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মীর খায়রুল আলম, পেট্রোবাংলার পরিচালক (পরিকল্পনা) মো.আমিনুজ্জামানসহ খনি কর্তৃপক্ষ তাদের আশ্বাস দেওয়ায় অবস্থান ধর্মঘট স্থগিত করা হয়।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ১ হাজার ৪১ জন খনি শ্রমিক কয়লা খনিতে কাজ করে আসছেন। তাদের দৈনিক মজুরি দেওয়া হয় সারফেজে ২৯৭ টাকা এবং ভূ-গর্ভে ৩৫০ টাকা মাত্র। মাসে একজন শ্রমিক ১৮-২০ দিনের বেশি কাজ করতে পারেন না। ফলে মাস শেষে তাদের বেতন দেওয়া হয় ৬ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকা। এই টাকা দিয়ে পরিবার নিয়ে তাদের অনেক কষ্টে দিনযাপন করতে হয়। খনি কর্তৃপক্ষের নানা টালবাহানার মুখে রবিবার দুপুর থেকে খনি ভূ-গর্ভে ২৮৫ জন, সারফেজে সাড়ে ৪০০ জন সহ ১ হাজার ৪১ শ্রমিক নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থান ধর্মঘট শুরু করে।
বিডি প্রতিদিন/১১ জানুয়ারি ২০১৭/হিমেল