সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের সমকাল প্রতিনিধি সাংবাদিক শিমুল হত্যা মামলার প্রধান আসামী শাহজাদপুর পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক হালিমুল হক মীরুকে সিরাজগঞ্জ কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নিরাপত্তার জনিত কারণে তাকে শাহজাদপুর কোর্টে না নিয়ে সিরাজগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল আদালতে হাজির করা হয়েছিল।
সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে মেয়রকে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক মোরশেদ আলম তাকে সিরাজগঞ্জ জেলা কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। এর আগে মেয়র মিরুকে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল ঢাকার শ্যামলীপাড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করেন।
সরকার ও প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞ-এখন ফাঁসি চাই:
দ্রুত সময়ের মধ্যে সাংবাদিক শিমুল হত্যা মামলার প্রধান আসামী মেয়র মিরুকে গ্রেফতার করায় সরকার ও প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন সাংবাদিক শিমুলের স্ত্রী নুরুন্নাহারসহ সিরাজগঞ্জে কর্মরত সাংবাদিকরা।
এক প্রতিক্রিয়া শিমুলের স্ত্রী নুরুন্নাহার বলেন, আমি সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ। এখন সরকারের প্রতি আমার একটাই দাবি দ্রুত সময়ের মধ্য মামলার অন্য আসামিদের গ্রেফতার করে ফাঁসি কার্যকরের সকল আইনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার ব্যবস্থা গ্রণি করা হবে। সিরাজগঞ্জ টেলিভিশন ফোরামে সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস হাসান বলেন, আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ন্যায় বিচারের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।
আদালতপাড়ায় কড়া নিরাপত্তা:
মেয়র মীরুকে কোর্টে আনার আগ থেকে কারাগারের প্রেরণের সময় পর্যন্ত আদালত পাড়ায় কঠোর নিরাপত্তা গ্রহণ করা হয়েছিল। আদালতের চারিদিকে র্যাব-পুলিশ-ডিবি পুলিশ দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছিল। মেয়রকে আদালতে আনা হচ্ছে সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে শত শত মানুষ আদালত প্রাঙ্গনে ভীড় জমিয়েছিল। দুপুর আড়াইটার দিকে পুলিশ পাহারায় মেয়র মীরুকে আদালতে নিয়ে আসা হয়। এরপর গাড়ি থেকে নামিয়ে সরাসরি কোর্ট হাজতখানায় রাখা হয়। প্রায় ২০ মিনিট পর তাকে বিচারকের সামনে হাজির করা হয়। সেখানে দুই মিনিট থাকার পরই পুলিশ পাহারায় তাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
সাতদিনের রিমান্ড আবেদন:
মেয়র মীরুকে শুধু সিরাজগঞ্জ আদালতে হাজির করার পর কারাগারে পাঠানো পর শাহজাদপুর আদালতে মেয়রের সাতদিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহজাদপুর থানার ওসি তদন্ত মনিরুল ইসলাম শাহজাদপুর কোর্টের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট হাসিবুল হাসানের আদালতে এ আবেদন করেন। সাংবাদিক শিমুল হত্যার দুটি মামলায় (বিস্ফোরক ও হত্যা) তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
ফাঁসির দাবিতে পোস্টারিং:
সাংবাদিক শিমুলকে গুলি করে হত্যাকারী ঘাতক মিরুর ফাঁসির দাবিতে পোস্টার-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে পুরো শাহজাদপুর ও সিরাজগঞ্জ আদালত পাড়ায়। মানুষের মুখে মুখে রটছে মেয়রের কুর্কীতি ও তার গ্রেফতারের বিষয়।
আমি সাংবাদিক হত্যা করতে পারি না, আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার:
আদালত থেকে কারাগারে নেয়ার জন্য গাড়ি ওঠানোর সময় মেয়র হালিমুল হক মীরু সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমি কখনো সাংবাদিককে হত্যা করতে পারিনা। আমি দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করি। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছি। তিনি আরও বলেন, যারা সরাসরি বলছে আমিই গুলি করেছি, তারাই আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। গাড়িতে ওঠার আগে তার স্ত্রীকে বুকিয়ে ধরে বলেন, ভয় নেই, টেনশন করো না। আমার কিছুই হবে না।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ/ সালাহ উদ্দীন