রংপুরে জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি হত্যা মামলার যুক্তিতর্কের দিন ১৯ ফেব্রুয়ারি ধার্য করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার দুপুরে মামলার আসামি জেএমবি সদস্য সাখাওয়াত হোসেন ওরফে রাহুলের(৩০) পক্ষে একজনের সাফাই সাক্ষি গ্রহণের পর রংপুরের বিশেষ জজ নরেশ চন্দ্র সরকার যুক্তিতর্কের দিন ধার্য করেন বলে আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রথীশ চন্দ্র ভৌমিক বাবু সোনা জানিয়েছেন।
তিনি জানান, বেলা ১১টায় গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার হলদিয়াবাড়ি ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুল মজিদ মণ্ডল আসামি সাখাওয়াতের পক্ষে সাফাই সাক্ষ্য দেন। তিনি আদালতে দাবি করেন সাখাওয়াত কুনিও হোশি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নন। সাক্ষাওয়াতের বাড়ি গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার হলদিয়াবাড়ি ইউনিয়নের হলদিয়ার চর এলাকায় বলে জানান আইনজীবী রথীশ।
সকালে পুলিশি নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে অভিযুক্ত আট আসামির মধ্যে কারাগারে থাকা পাঁচজনকে আদালতে হাজির করা হয়। এরা হলেন জেএমবির রংপুর আঞ্চলিক কমান্ডার মাসুদ রানা ওরফে মন্ত্রী, সদস্য ইছাহাক আলী, লিটন মিয়া, আবু সাঈদ ও সাখাওয়াত হোসেন ওরফে রাহুলকে আদালতে হাজির করা হয়। পলাতক আসামিদের মধ্যে সাদ্দাম হোসেন ওরফে রাহুল গত ৫ জানুয়ারি রাতে ঢাকার মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় কাউন্টার টেরোরিজম পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ এবং নজরুল ইসলাম ওরফে বাইক নজরুল ওরফে হাসান গত বছরের ২ অগাস্ট ভোরে রাজশাহীতে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন।
আরেক আসামি কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার মকর রাজমাল্লী এলাকার আহসান উল্লাহ আনসারী ওরফে বিপ্লব এখনও পলাতক রয়েছেন। তিনি রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। আহসান উল্লাহ আনসারী ওরফে বিপ্লব গত বছরের জানুয়ারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবন্ধক ইব্রাহীম কবীর জানিয়েছেন।
আইনজীবী রথীশ জানান, গত ৬ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য দেওয়ার মধ্যদিয়ে এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়ে যায়। ৫৭ সাক্ষির মধ্যে ৫৫জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। দুই সাক্ষী ভারতে পালিয়ে যাওয়ায় আদালত সাক্ষ্য গ্রহণ শেষের ঘোষণা দেন।
২০১৫ সালের ৩ অক্টোবর সকালে নগরীর মুন্সিপাড়ার ভাড়া বাড়ি থেকে রিকশায় করে কাউনিয়া উপজেলার সারাই ইউনিয়নের আলুটারি গ্রামে ঘাষের খামারে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হন ৬৬ বছর বয়সী জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি। ওই দিনই কাউনিয়া থানার তৎকালীন ওসি রেজাউল করিম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গত বছরের ৩ জুলাই জেএমবির আট সদস্যের বিরুদ্ধে রংপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরে মামলাটি বিশেষ জজ আদালতে স্থানান্তর করা হয়।
মাসুদ রানা ওরফে মন্ত্রী, ইছাহাক আলী, লিটন মিয়া, আবু সাঈদ, সাখাওয়াত হোসেন ওরফে রাহুল কুনিও হোশি হত্যা মামলার আসামি ছাড়াও কাউনিয়া উপজেলায় মাজারের খাদেম রহমত আলী হত্যা এবং বাহাই নেতা রুহুল আমীনকে গুলি করে হত্যা চেষ্টা মামলার অভিযোগপত্রভূক্ত আসামি। আর আহসান উল্লাহ আনসারী ওরফে বিপ্লব বাহাই নেতা হত্যা চেষ্টা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি।