কক্সবাজার জেলার টেকনাফে বঙ্গোপসাগরে ৫ ফিশিং ট্রলারে ডাকাতির ঘটনায় ট্রলারসহ ৩ জেলে নিখোঁজ রয়েছে। গত ১২ ফেব্রুয়ারী শাহপরীর দ্বীপ এলাকা থেকে ট্রলারগুলো প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারে যায়। এরপর মাছ শিকারের তৃতীয় দিনে ডাকাতের কবলে পড়ে বলে জানিয়েছেন ট্রলার মালিকেরা।
তারা জানান, গত মঙ্গলবার গভীর রাতে টেকনাফ শাহপরীরদ্বীপের পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের ১২ বাইন এলাকায় শাহপরীর দ্বীপের ডেইল পাড়া এলাকার সুলতান আহাম্মদ মাঝির দুই ট্রলার, উত্তর পাড়া এলাকার হোসন মাঝি, মাঝর পাড়া এলাকার রহিম উল্লাহ মাঝি, মিস্ত্রি পাড়ার শমসুসহ ৫টি ট্রলার মাছ শিকার করছিল। এ সময় হঠাৎ করে একদল জলদস্যু ট্রলার নিয়ে এসে সুলতান আহাম্মদ মাঝির একটি ট্রলারে উঠে আমিন উল্লাহ মাঝিসহ ১১ মাঝি-মাল্লাকে সাগরে ফেলে দিয়ে ট্রলারটি নিয়ে পাশ্ববর্তী আরও ৪টি ট্রলারের মাঝি-মাল্লাদের ওপর হামলা ও লুটপাট চালিয়ে ইঞ্জিন নষ্ট করে চলে যায়।
এদিকে সাগরে ডাকাতির খবরে ট্রলার মালিকরা অন্য কয়েকটি ট্রলার পাঠিয়ে ৮ জেলেকে উদ্ধার করলেও ট্রলার মাঝি শাহপরীর দ্বীপ বাজার পাড়ার আমিন উল্লাহ, উত্তর পাড়া এলাকার মোন নূর, ডেইল পাড়া এলাকার মো. কাশেম এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।
এদিকে, সাগরে ডাকাতের কবলে পড়া ৫টি ট্রলারের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে ভাসমান অবস্থায় ৪টি ট্রলারসহ মাঝি-মাল্লার সন্ধান পাওয়া গেলেও ডাকাত কর্তৃক নিয়ে যাওয়া ট্রলারসহ ৩ জেলের সন্ধান পাওয়া যায়নি। ভাসমান ট্রলার সমূহকে অন্য ট্রলারের সাহায্যে শাহপরীর দ্বীপে টেনে নিয়ে আসা হচ্ছে এবং নিখোঁজ ট্রলার ও জেলেদের খুঁজতে সাগর ও উপকূলে অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানায় নিখোঁজ ট্রলার মালিক সুলতান আহাম্মদ মাঝি।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনার বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। সাগরে জলদস্যুর ওঁৎপাত বেড়েছে। এখন আমাদের কি উপায় হবে জানি না।
এদিকে সাগরে ট্রলার ডাকাতির ঘটনায় জেলে সম্প্রদায়ের মাঝে ফের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। সাগরে মাছ শিকারে যাওয়া জেলে ও ট্রলারের খোঁজে শাহপরীর দ্বীপ জেটি ঘাটে মালিক ও জেলেদের আত্মীয়-স্বজন অপেক্ষার প্রহর গুনছেন।
শাহপরীর দ্বীপ বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. কাশেম জানান, সাগরে মাছ শিকারে গিয়ে ৫টি ট্রলার ডাকাতের কবলে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। তার মধ্যে একটি ট্রলার ও তিন জেলে নিখোঁজ রয়েছেন। এ ডাকাতির বিষয়টি স্থানীয় কোস্টর্গাড ও বিজিবিকে মোখিকভাবে জানানো হয়েছে। তবে ঘটনার বিষয়টি টেকনাফ মডেল থানায় অভিযোগ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলেও তিনি জানান।
মো. কাশেম আরও বলেন, হঠাৎ করে সাগরে জলদস্যুর ওঁৎপাত দেখা গেছে। ফলে জেলে সম্প্রদায়ের মাঝে নতুন করে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সাগরে জলদস্যুতা বন্ধে সরকারের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন তিনি।
বিডি-প্রতিদিন/১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭/মাহবুব