বিশ বছর আগে লাইফ টাইম শেষ হওয়া রেল ইঞ্জিন দিয়ে চলছে বোনারপাড়া-সান্তাহার-লালমনিরহাট রুট। এতে যাত্রীদের প্রতিনিয়ত চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
জানা গেছে, বোনারপাড়া-সান্তাহার-লালমনিরহাট রুটের ট্রেনের ইঞ্জিনগুলো উৎপত্তিস্থল থেকে শুরু করে কখনও নিরাপদ গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছে না। দু’এক ষ্টেশন অতিক্রম করেই ইঞ্জিন বিকলসহ নানা ক্রটির কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পড়ে থাকে ট্রেন। ইঞ্জিনের সংকটের কারণে ক্রটিপূর্ন ওই সব ইঞ্জিন দ্বারাই খুড়িয়ে খুড়িয়ে চালানো হচ্ছে এসব ট্রেন। ফলে এ রুটে চলাচলকারী ট্রেনগুলোর কোনোটিরই সময়সীমা ঠিক নেই। এ কারণে বেড়ে চলেছে যাত্রীদের দুর্ভোগ।
ব্রিটিশ আমলের এসব রেলওয়েতে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর কয়লার ব্রয়লার ইঞ্জিনের পরিবর্তন ঘটিয়ে প্রথম ডিজেল চালিত ইঞ্জিন আনা হয়। তা দিয়েই অনেক দিন চলে এ রুটের ট্রেনগুলো। পরে সাবেক রাষ্ট্রপতি মরহুম জিয়াউর রহমানের শাসন আমলে রেলমন্ত্রী আব্দুল আলীমের ব্যবস্থাপনায় এ রুটে বেশকিছু হাঙ্গেরি ইঞ্জিন নিয়ে আসা হয় অন্যদেশ থেকে, যা সাল্টিং কাজে ব্যবহারের জন্য। এসব ইঞ্জিনের লাইফ টাইম কোনোটিরই নেই। কোনোটির ত্রিশ বছর আবার কোনোটির বিশ বছর পূর্বে শেষ হয়েছে লাইফ টাইম।
লাইফ টাইম অতিক্রান্ত হওয়া এসব ইঞ্জিন বহুবার মেরামত করে সচল রাখা হয়েছে। ইঞ্জিনগুলো বেশির ভাগ সময় ধরে রেলওয়ে লোকোসেডে (রেলওয়ে কারখানা) মেরামতের জন্য পড়ে থাকে। পশ্চিমাঞ্চলের সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায়, দক্ষ জনবল (মিস্ত্রি) দিন দিন অবসর নেয়ায় সমস্যা আরো প্রকট হচ্ছে। সামান্য সমস্যায় অধিক সময় ব্যয় হচ্ছে, প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ এসব ইঞ্জিন মেরামত করতে চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল।
বোনারপাড়া-সান্তাহার-লালমনিরহাট রেলরুটে চলাচলকারী ট্রেনগুলো প্রতিটি এক থেকে দেড় ঘণ্টা দেরিতে যাতায়াত করে। কোনো ট্রেনই সঠিক সময়ে যাত্রা বিরতি কিংবা গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে না। লালমনিরহাট থেকে ঢাকা গামী লালমনি এক্সপ্রেস ১২টা ৫০ মিনিটের স্থলে এক থেকে দেড় ঘণ্টা দেরিতে বোনারপাড়া ষ্টেশনে পৌঁছে। অন্যান্য লোকাল ও মেইল ট্রেনগুলো কোনোদিনই সঠিক সময়ে চলাচল করতে পারেনা।
বিডি প্রতিদিন/১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/হিমেল