লক্ষ্মীপুর ১০৭০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে আজো গড়ে ওঠেনি শহীদ মিনার। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ফুল দিয়ে শহীদদের সম্মান জানাতে পারেনা। অনেক প্রতিষ্ঠানে শুধু জাতীয় পতাকা তুলেই দায়িত্ব পালন করেন শিক্ষকরা। কোন কোন প্রতিষ্ঠানে বাঁশের কঞ্চি অথবা কলা গাছ দিয়ে শহীদ মিনার বানিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানানো হয়।
এদিকে অযত্ন আর অবহেলায় সদর উপজেলার পিয়ারাপুরে একটি শহীদ মিনার দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকলেও সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
জেলা শিক্ষা ভবন কার্যালয় ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সুত্রে পাওয়া তথ্য মতে. লক্ষ্মীপুর জেলায় সরকারি প্রাক প্রাথমিক ও সরকারি প্রাথমিক স্কুল রয়েছে ৭৩১টি, মাধ্যমিক ও নিম্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ১৭৮টি, মাদ্রাসা ১৩৩টি, কারীগরী ও কলেজ ২৮টিসহ মোট ১০৭০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কি পরিমান প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার রয়েছে তার কোন তথ্য জানাতে পারেনি জেলা শিক্ষা অফিসার মো. মাহফুজুর রহমান ভূঁইয়া। তবে স্থানীয়দের তথ্য অনুযায়ী অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। এমনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সদর উপজেলার উত্তর পিয়ারাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পাশাপাশি পিয়ারাপুর শহীদ মাজহারুল মনির উচ্চ বিদ্যালয়। ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া এ উচ্চ বিদ্যালয় ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এখনো গড়ে ওঠেনি শহীদ মিনার।
এখানকার শিক্ষার্থীরা জানান, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আসলে তারা বাঁশের কঞ্চি কিংবা কলা গাছ দিয়ে শহীদ মিনার তৈরী করে দিবসটি পালন করেন। কেউ কেউ বলেন, ভাষার মাস আসলেই সাংবাদিকরা তাদের বিদ্যালয়ে ছুটে যান, এভাবে বছরের পর বছর যায় তবুও শহীদ মিনার নির্মাণ হয়না। এতে করে ভাষা শহীদদের প্রতি অনেকে সম্মান জানাতে পারেনা বলে জানান। একই কথা জানিয়ে ওই বিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার স্থাপনের দাবী জানান শিক্ষকরা। একইভাবে ভবানীগঞ্জ ডিগ্রী কলেজ, টুমচর আসাদ একাডেমী স্কুল এন্ড কলেজ, শাকচর মদিন উল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়সহ জেলার অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার গড়ে ওঠেনি এখনো।
এদিকে পিয়ারাপুর ব্রীজের পাশে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে গড়ে ওঠা একটি শহীদ মিনার এখন অযত্ন, অবহেলায় পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। স্থানীয়রা জানান, এক সময়ে ভাষার মাসে ওই শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা ও সম্মান জানাতো এলাকার লোকজন। এখন শহীদ মিনারের পাশে ব্যাক্তি মালিকানাধীন সমিল হওয়ায় শহীদ মিনারটি পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। ভেঙ্গে গেছে মিনারটি। শহীদ মিনারটি সংস্কার ও দখলমুক্ত করার দাবি জানান এলাকাবাসী।
জেলার প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার স্থাপনের দাবি জানান জন প্রতিনিধিরাও।
শহীদ মিনার স্থাপন ও শহীদদের স্মৃতি চারণ নিয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শামছুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সরকারের কর্ম পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার স্থাপনে স্বচেষ্ট রয়েছে জেলা পরিষদ। শহীদদের স্মৃতি রক্ষায় কাজ করার প্রত্যয়ও ব্যক্ত করেন তিনি।