কটকটি বিক্রেতা ও দরিদ্র পিতার ১০ম শ্রেণি পড়ুয়া স্কুলছাত্রীর স্বপ্ন ছিল পড়ালেখা করে সেনাবাহিনীতে চাকুরি করবে। কিন্তু এলাকার এক বখাটের কারণে ওই স্কুলছাত্রী এখন অনেকটা গৃহবন্দী। লজ্জ্বায় সে বাড়ির বাইরে বের হয় না। অভিযোগ, বখাটে রুপচান মেয়েটিকে জোরপূর্বক বিবস্ত্র করে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। মেয়েটির চিৎকারে এলাকাবাসী ছুটে আসলে কোন রকমে রক্ষা পায় মেয়েটি। কিন্তু এই ঘটনা তার জীবনকে ওলট-পালট করে দিয়েছে। এই ঘটনার বিচার না পেলে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছে অভিমানী স্কুলছাত্রীটি।
ইতোমধ্যে কয়েকবার আত্মহত্যার চেষ্ঠাও সে করেছে বলে জানিয়েছে ভিকটিমের বাবা ও স্থানীয়রা। মেয়েটি সদর উপজেলার গাজীরখামার ইউনিয়েনের পলাশিয়া গ্রামের হত দরিদ্র আব্দুল মালেকের কন্যা। সে গাজীরখামার উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্রী।
জানা গেছে, গত ১১মার্চ রাতে সদর হাসপাতালে ওই স্কুলছাত্রীর অসুস্থ বড় বোনকে তার বাবা-মা ভর্তি করাতে নিয়ে যায়। বাড়িতে মেয়েটিকে একা দেখে সুযোগ মত বেড়া কেটে ঘরে প্রবেশ করে বখাটে রুপচান। ঘরে ঢুকে মেয়েটিকে বিবস্ত্র করে ধর্ষণের চেষ্টা করে। কিন্তু মেয়েটির ডাক চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে আসলে সম্ভ্রম হারানো থেকে কোন রকমে রক্ষা পায় মেয়েটি। পরে ওই বখাাটে যুবককে এলাকাবাসী আটক করে পুলিশে দেয়।
এ নিয়ে স্কুলছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে রুপচান ও তার বাবা-মাসহ চার জনকে আসামি করে শেরপুর সদর থানায় মামলা করেছেন। ঘটনার দিন পুলিশ দুই জনকে ধরে জেল হাজতে পাঠায়। পরে আরও দু'জন আদালতে হাজিরা দিলে রুপচান বাদে তিনজন জামিনে বের হয়ে এসে রাতেই বাদীর ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে। এ নিয়ে বাদী থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
মেয়েটির বাবার অভিযোগ, তার কন্যাকে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে ওই বখাটে উত্যক্ত ও নানাভাবে কুপ্রস্তাব দিত। তারপর ঘটনার দিন ধর্ষণ করতে এসে ধরা পড়ার পর জেল হাজত থেকে ছাড়া পেয়ে বখাটে রুপচানের আত্মীয়রা বার বার হুমকি ও তার মেয়েকে অপহরণ করার চেষ্টা করছে। তাদের অত্যাচারে মেয়েটি বাড়ি থেকে বের হতে না পেরে এখন আত্মহত্যা করার চেষ্টা করছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ রুপচান আগেও একটি বিয়ে করেছিল। বউ চলে গেছে। সে একজন বখাটে ও তার পরিবার এলাকায় বেশ প্রভাবশালী। বর্তমানে মেয়েটির পরিবার আতংকগ্রস্থ ও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে। স্থানীয়রা বখাটে রুপচানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি করেছেন।
স্থানীয়দের আরও অভিযোগ, সালিশ বৈঠক করে বিষয়টির আপোষ মিমাংসার চেষ্টা করা হয়। রুপচানের বাবা ও ভাইয়েরা সালিশে না এসে মেয়েটিকে বিয়ে দেয়ার প্রস্তাব দেয়। মেয়েটি বিয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে রুপচানের শাস্তি দাবি করেছে। এছাড়া মেয়েটি এখনো নাবালিকা।
শেরপুর সদর থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মো. নজরুল ইসলাম জানান, ভিকটিম আমাদের নজরে আছে। স্কুলছাত্রীর ওপর যে কোন ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ