ইলিশের দেশ বরিশালে চলছে ইলিশের আকাল। ভরা মৌসুম না হওয়ায় যে পরিমান ইলিশ মোকামে আসছে, তার চেয়ে চাহিদা বেশি। তাই দামও আকাশচুম্বী। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঢাকার চেয়ে বরিশালে এখন ইলিশের দাম বেশি। পহেলা বৈশাখের আগ পর্যন্ত দাম আরও বাড়তে পারে বলে আভাস দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
নদীর দেশ বরিশালের বিভিন্ন মিঠা পানির নদী থেকে আহরিত ইলিশের চাহিদা সারা দেশে। অভ্যন্তরীণ নদী ছাড়াও সমুদ্র থেকে আহরিত ইলিশ আসে বরিশালের মোকামে। তবে ভরা মৌসুম না হওয়ায় তেমন ইলিশ আসছে না। যা আসছে- সেগুলো পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ২৫ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা মণ দরে। এসব ইলিশ স্থানীয় বিভিন্ন বাজারে বিক্রির পাশাপাশি যাচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে।
নগরীর পোর্ট রোডের পাইকারি ইলিশ ব্যবসায়ী মো. নাসির উদ্দিন জানান, বার্মিজ (মিয়ানমার) ইলিশে সয়লাব দেশের ইলিশ বাজার। বার্মিজ ইলিশের আধিক্যের কারণে এবার দেশের ইলিশের দামও তুলনামূলক কম। বরিশালের মোকামের চেয়েও ঢাকার বাজারে ইলিশ সস্তা বলে তিনি জানান।
অমল বিশ্বাস নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, নদীতে তেমন ইলিশ ধরা পড়ছে না। সরবরাহ কম থাকায় বরিশালের বাজারে ইলিশের দাম বেশি। পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে আগামী কয়েক দিন ইলিশের দাম আরও বাড়বে বলে ধারণা তার।
আব্দুল হালিম সিকদার নামে এক আড়তদার জানান, বরিশালের মোকামে গতকাল মঙ্গলবার দেড় কেজির বেশি আকারের প্রতিমণ ইলিশ বিক্রি হয়েছে ১ লাখ ৮০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকায়, কেজি সাইজের প্রতিমণ বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৯০ হাজার, এলসি সাইজের প্রতিমণ ৫০ থেকে ৫৫ হাজার এবং ৫শ’ গ্রাম সাইজের প্রতিমণ ইলিশ বিক্রি হয়েছে ২২ থেকে ২৫ হাজার টাকায়।
দাম যাই হোক না কেন রসনা বিলাসীদের চাই ইলিশ। এর উপর আবার পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে চলছে ইলিশ কেনার ধুম। তবে দাম নিয়ে ক্রেতাদের রয়েছে নানা অনুযোগ।
হুমায়ুন কবির নামে এক ক্রেতা জানান, ইলিশ খাওয়া বাঙালির নেশায় পরিণত হয়েছে। এছাড়া ইলিশ হলে পহেলা বৈশাখও ভালভাবে উদযাপন করা যাবে। তাই দাম যতই হোক না কেন ইলিশ চাই তার।
পোর্ট রোড খুচড়া বাজারে জহির রায়হান নামে ইউনিয়ন ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, পরিবারের প্রয়োজনে ইলিশ কিনতে এসেছেন। কিন্তু ইলিশের দামটা তার কাছে বেশি মনে হচ্ছে। বাজার যাচাই করে ইলিশ কেনার কথা বলেন তিনি।
বরিশাল জেলা মৎস্য অফিসের ইলিশ কর্মকর্তা বিমল চন্দ্র দাশ জানান, এখন ইলিশের প্রকৃত মৌসুম নয়। গত পহেলা নভেম্বর থেকে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত জাঁটকা শিকার নিষিদ্ধ। এছাড়া বিভাগের তিনটি ইলিশ অভয়াশ্রমের মধ্যে আন্দারমানিক নদীতে নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত, ভোলার ভেদুরিয়া থেকে পটুয়াখালীর চররুস্তুম এবং ভোলার চর ইলিশা থেকে চর পিয়াল পর্যন্ত মার্চ থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সব ধরণের মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা চলছে। এ কারনে বাজারে ইলিশের সরবরাহ কম। আগামী কয়েকদিনে ইলিশের দাম আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা তার।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ