সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক, তাঁর স্ত্রী ও দুই কন্যার নামে প্রায় ৬২ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি। গতকাল বেলা সাড়ে ৩টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক প্রধান কার্যালয়ে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এসব জানান সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।
তিনি জানান, তারিক সিদ্দিকের নামে ২৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদের প্রমাণ মিলেছে। চারটি ব্যাংক হিসাবে ৬২ কোটি ৬০ হাজার ৯৮৪ টাকার সন্দেহমূলক লেনদেন হয়েছে। তাঁর স্ত্রী শাহিন সিদ্দিকের নামে ২৫ কোটি ৭৬ লাখ ৯৩ হাজার ২১৫ টাকার জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। ১১টি ব্যাংক হিসাবে ৫৯ কোটি ৩৮ লাখ ৩৭ হাজার ৩৮৭ টাকার সন্দেহমূলক লেনদেন পাওয়া গেছে। সিদ্দিক দম্পতির দুই মেয়ে নূরিন তাসফিয়া সিদ্দিক ও বুশরা সিদ্দিকের নামে যথাক্রমে ৩ কোটি ৩৭ লাখ ১৭ হাজার ১৯২ ও ৪ কোটি ২ লাখ ৯৭ হাজার ৮৬ টাকার অবৈধ সম্পদের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাঁদের বিরুদ্ধে প্রায় ৬২ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের প্রমাণ পাওয়ায় পৃথক মামলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তারিক সিদ্দিক ও তাঁর স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবে প্রায় ১২২ কোটি টাকার সন্দেহমূলক লেনদেনের প্রমাণ মিলেছে।
দুদক জানায়, তারিক পরিবারের পাওয়া সম্পদের বাজারমূল্য ২০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার কথা। দুদককে যেহেতু আদালতে প্রমাণ করতে হবে তাই দালিলিক মূল্যই বিবেচনা করা হয়। একাধিক অনুসন্ধান চলমান। তারিক সিদ্দিক দুদকের একাধিক মামলার আসামি। তাঁর স্থাবর-অস্থাবরসহ সম্পদের পরিমাণ মিলেছে ৪৩ কোটি ৬৩ লাখ ৬১ হাজার ৬৩৬ টাকা।
ব্যয় ৫ কোটি ১ লাখ ৪২ হাজার ৭৬৫ টাকা। ব্যয়সহ সম্পদের পরিমাণ ৪৮ কোটি ৬৫ লাখ ৪ হাজার ৪০১ টাকা। গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় ১৫ কোটি ৮৫ লাখ ৪১ হাজার ১৬৯ টাকা। দায়দেনা যোগ করলে গ্রহণযোগ্য আয় ২০ কোটি ৫ লাখ ৪১ হাজার ১৬৯ টাকা। ২৮ কোটি ৫৯ লাখ ৬৩ হাজার ২৩২ টাকা অনুসন্ধানকালে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ।
তারিক সিদ্দিকের স্ত্রী শাহিন সিদ্দিকের স্থাবর-অস্থাবরসহ সম্পদ পাওয়া গেছে ৩৬ কোটি ৫৭ লাখ ৯৮ হাজার ৮৮৮ টাকা। ব্যয় ৬ কোটি ৭২ লাখ ২ হাজার ৫৪০ টাকা বিবেচনায় নিয়ে তাঁর সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৩ কোটি ৩০ লাখ ১ হাজার ৫২৮ টাকা। তাঁর গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় ১৭ কোটি ৫৩ লাখ ৮ হাজার ৮৬১ টাকা। ২৫ কোটি ৭৬ লাখ ৯৩ হাজার টাকার সম্পদ অনুসন্ধানকালে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ বলে মনে হয়েছে।