নিষিদ্ধ ঘোষিত হরকাতুল জিহাদের (হুজি) শীর্ষনেতা মুফতি আব্দুল হান্নানের ফাঁসির রায় যেকোন সময় কার্যকর হবে। রায় কার্যকর হবার পর তার লাশ গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার হিরন গ্রামের হিরন বালিকা মাদ্রাসা ও এতিখানা সংলগ্ন পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে পারিবারিক সূত্রে জানাগেছে।
বুধবার দুপুরে পারিবারিক কবরস্থানে ইতোমধ্যে হান্নানের জন্য কবর খোড়ার কাজও শেষ হয়েছে।
তবে মুফতি হান্নানের লাশ দাফন নিয়ে তার নিজ এলাকায় নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা, সাধারণ গ্রামবাসী ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা তার লাশ কোটালীপাড়ায় দাফনের ঘোর আপত্তি জানিয়েছেন। এখানে যাতে এই শীর্ষ জঙ্গি নেতার লাশ দাফন না হয় তার জন্য ইতোপূর্বে কোটালীপাড়ায় বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে উপজেলা ছাত্রলীগ। এমনকি তার নিজ গ্রাম হিরনের গ্রামবাসী এ গ্রামে যাতে লাশ দাফন না হতে পারে তার জন্য কর্মসূচী পালন করেছে।
কোটালীপাড়ার হিরন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুন্সি এবাদুল ইসলাম তার প্রতিক্রিয়ায় জানান, মুফতি হান্নানের ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ার মধ্যদিয়ে ইউনিয়নবাসী কলঙ্ক মুক্ত হবে। আমরা কোন অবস্থায় এই কুলঙ্গারের লাশ হিরণ গ্রামে দাফন করতে দেব না। যে কোন মূল্যে তা প্রতিহত করা হবে।
কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কিবরিয়া দাড়িয়া বলেন, মুফতি হান্নানের ফাঁসির কর্যকর হলে আমরা আনন্দিত। আমাদের প্রাণ প্রিয় নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে বোমা পুতে হত্যা চেষ্টা করেছিল মুফতি হান্নান। আমরা এই মাহেন্দ্রক্ষনের অপেক্ষায় ছিলাম কখন তার ফাঁসি কার্যকর হবে। কারা কর্তৃপক্ষের চিঠি অনুযায়ী মুফতি হান্নানের পরিবারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক বড় ভাই আলিউজ্জামান মুন্সী, মুফতি হান্নানের স্ত্রী জাকিয়া পারভীন রুমা এবং বড় মেয়ে নিশি খানম মঙ্গলবার রাতেই কাশিমপুর কারাগারের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন বলে মুফতি হান্নানের ছোট ভাই মতিয়ার মুন্সী জানিয়েছেন।
উলেখ্য, ২০০৪ সালের ২১মে সিলেটের হযরত শাহজালালের (র.) মাজারে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা হয়। হামলায় আনোয়ার চৌধুরী, সিলেটের জেলা প্রশাসকসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত এবং নিহত হন দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ তিনজন।
মামলার বিচার শেষে ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিচারিক আদালত সিলেটের দ্রত বিচার ট্রাইব্যুনাল ৫ আসামির মধ্যে মুফতি হান্নান, বিপুল ও রিপনকে মৃত্যুদন্ড এবং মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেন।
উল্লেখ্য, যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রাপ্ত মহিবুল্লাহ মুন্সী ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আব্দুল হান্নান মুন্সীর আপন ভাই।