পাবনায় এক ভারতীয় নাগরিকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এই ভারতীয় নাগরিকের মৃত্যু হয়। তবে হাসপাতালের রেজিস্টার রেকর্ড খাতায় নিহত ব্যক্তির পরিচয় ও ঠিকানা ভুল লেখা হয়েছে।
পুলিশের ধারণা ছব্দ নাম দিয়ে জনৈক সাইফুল্লাহ ওই ভারতীয় নাগরিককে ভর্তি করেন।
নিহত ব্যক্তি ইয়াদব জাদবের বাবা রাম বিলাস ইয়াদব। তার বাড়ি ভারতের বিহার প্রদেশের পিথুয়াতুল গ্রামে। ঘটনার সন্দেহে ঈশ্বরদী কালিকাপুর ইউনিয়নের নোয়াখালি মহল্লার নাসিমা আকতার ও সাইফুল্লাহ নামে বাবা মেয়েকে আটক করেছে পুলিশ। লাশের ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করেছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শী হাসপাতাল ব্যবস্থা কমিটির সদস্য এ কে এম হাসান হীরা বলেন, গত শনিবার রাতে আমি হাসপাতালে তখন উপস্থিত ছিলাম। এক নারী এবং ৫জন যুবক ওই লোকটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। তার মুখে গন্ধ এবং মুখ দিয়ে লালা বের হচ্ছিলো। ডাক্তার দেখার পরে তাদেরকে রাজশাহীতে নেয়ার কথা বলা হয়। কিন্তু যারা তাকে নিয়ে এসেছিলো তারা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে চলে যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা: হাবিবুল্লাহ বলেন, তাকে মদ বা কোন নেশা জাতীয় দ্রব্যের সাথে বিষ খাওয়ানো হয়েছিল। তবে কারা এ কাজ করেছিল আমরা বলতে পারছি না। হাসপাতালে ভর্তির পর পরই তার অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। রেফার্ড করার মতো অবস্থাও ছিল না।
ঘটনার বিষয়ে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাঃ মঞ্জুরা রহমান বলেন, শনিবার রাতে ঈশ্বরদী হাসপাতাল থেকে একটি রোগি আমাদের হাসপাতালে ভর্তি হয়, তখন যে চিকিৎক কর্তব্যরত ছিলেন, রোগিটি দেখে ধারনা করছেন সে বিষপান করেছিলো। অতিরিক্ত বিষক্রিয়ার ফলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। আমরা লাশের ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়ে দিয়েছি এবং পুলিশকে বিষটি জানানো হয়েছে। যেহেতু আমরা শুনতে পেরেছি সে ভারতীয় নাগরিক, তাই পরবর্তী পদক্ষেপ প্রশাসন গ্রহণ করবে। আমাদের এখানে লাশ রাখার কোন ব্যবস্থা নাই তাই লাশ ঢাকাতে পাঠিয়ে দিতে হবে।
এই বিষয়ে পাবনা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, রবিবার সকালে আমরা বিষয়টি জানতে পারি। আমরা জানতে পেরেছি তিনি ভারতীয় নাগরিক। ঈশ্বরদী থানা পুলিশকে বিষয়টি তদন্তের জন্য বলা হয়েছে। কি করণে তার মৃত্যু হয়েছে তা এখনো আমরা নিশ্চিত না। তবে সুরোত হালের পরে বিষয়টি জানা যাবে। মৃত্যুর কারল এখনো বলা যাচ্ছেনা তদন্ত শেষে বলা যাবে।
নিহত ইয়াদব ওরফে জাদব লাল পাবনা ঈশ্বরদীর রশিদ ওয়েল মিলে ইনচার্জ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত বছরের শেষ দিকে তিনি চাকরি হারান। এদিকে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ঈশ্বরদীর কালিকাপুরের নোয়াখালি পাড়ার জনৈক সাইফুল্লার মেয়ে নাছিমার সাথে তার সম্পর্ক ছিল। তিনি সেখানে নিয়মিত যাতায়ত করতেন। স্থানীয়দের ধারণা টাকা পয়সার জের ধরেই বিষক্রিয়ার মাধ্যমে তাকে হত্যা করা হতে পারে। তবে বিষয়টি তদন্ত চলছে।
বিডি প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন