সংবাদ প্রকাশের জেরে মাদারীপুরে দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অপহারণের মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে একটি প্রভাবশালী মহল। এরপরই ফুঁসে উঠেছে মাদারীপুরে কর্মরত সাংবাদিক সমাজ। মিথ্যা মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
‘ভদ্রখোলা আলোচিত ৫ খুনের বিচার হয়নি র্দীঘদিনেও’ এই শিরোনামে ৮ মে দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন ও বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেল নিউজ টোয়েন্টিফোরসহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকার হওয়ায় একটি প্রভাবশালী মহল ক্ষুদ্ধ হয়। ওই এলাকার একাধিক হত্যা মামলার আসামিরা সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়নের ভদ্রখোলা গ্রামের মালেক হাওলাদারের স্ত্রী তহমিনা বেগমকে দিয়ে মঙ্গলবার একটি অপহরণ মামলা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দায়ের করে। পরে ম্যাজিস্ট্রেট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আদেশ দিয়েছেন।
মামলায় দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন ও নিউজ টোয়েন্টিফোর এর মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধি বেলাল রিজভী ও দৈনিক খবর এর জেলা প্রতিনিধি আক্তার হোসেন বাবুলকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া এই সংবাদে যারা বক্তব্য দিয়েছে, তাদেরও মামলায় আসামি করা হয়েছে। এতে চরম ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে মাদারীপুরে কর্মরত সাংবাদিক সমাজ। তারা অচিরেই এই মিথ্যা মামলা থেকে দুই সাংবাদিকসহ অন্য আসামিদের অব্যাহতির দাবি জানান।
চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের জেলা প্রতিনিধি সাগর হোসেন তামিম জানান, চাঞ্চল্যকর ভদ্রখোলার সংবাদটি প্রকাশ হওয়ায় ওই এলাকার প্রভাবশালী একটি মহল দুই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলা দিয়েছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক ও লজ্জাকর। সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের জেরে এই মিথ্যা মামলার কোন যুক্তিই নেই। আমি দাবি করি, সদর থানা পুলিশ বিষয়টি তদন্তপূর্বক অব্যাহতি দেবেন।’ এছাড়া মাদারীপুর প্রেসক্লাবের অন্য সদস্যরা এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে।
প্রেসক্লাবের আহ্ববায়ক কমিটির সদস্য ও দৈনিক জনকণ্ঠের সাংবাদিক সুবল বিশ্বাস বলেন, সংবাদ প্রকাশের পর সাংবাদিকদের নামে মামলা হওয়া অত্যান্ত দুঃখজনক। এটা সঠিক সংবাদ প্রকাশে বিঘ্ন সৃষ্টি করবে। এমনকি আগামিতে সাংবাদিকরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবে না।
মাদারীপুর প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক কমিটির আরেক সদস্য এবং কালেরকণ্ঠের সাংবাদিক আয়শা সিদ্দিকা আকাশী বলেন, আমরা দ্রুত মামলা থেকে সাংবাদিকদের অব্যাহতি দাবী জানাচ্ছি। তাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা না হলে কঠোর আন্দোলনে যেতে আমরা বাধ্য হব।
মাদারীপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনসার উদ্দিন বলেন, ‘এ রকম হয়রানিমূলক মামলা অনেক সময়ই হয়। মামলা তদন্ত করে মিথ্যা প্রমানিত হলে সাংবাদিকদের অব্যাহতি দেয়া হবে।’
বিডি-প্রতিদিন/১০ মে, ২০১৭/মাহবুব