আবহাওয়ার আর মাটির কারণে দেশের অন্য জেলার তুলনায় সাতক্ষীরার আম আগে ভাগেই পাকে। তাই মধু মাস জ্যৈষ্ঠের শুরুতেই সাতক্ষীরার বাজারে উঠতে শুরু করেছে গোবিন্দভোগ, হিমসাগর, গোপালভোগ, বোম্বাই, ক্ষিরসরাইসহ সুস্বাধু নানা জাতের আম। মৌসুমি এই ফলের সুগন্ধে সাতক্ষীরার বাজারে ক্রেতাদের মাঝে আলাদা মাত্রা ছড়াতে শুরু করেছে।
আম চাষি ও ব্যবসায়ীদের কেনা-বেচায় ও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আম কিনতে আসা ব্যবসায়ীদের পদচারণায় সরগরম হয়ে উঠেছে সাতক্ষীরার সবচেয়ে বড় আমের হাট বড়বাজার। তবে এবার আমের বাজার একটু চড়া। তার পরেও মৌসুমের শুরুতেই বাজারে আম উঠায় চাহিদাও একটু বেশি। তাই প্রতিদিন ট্রাক ভর্তি করে সাতক্ষীরার গোন্ডি পেরিয়ে এখানকার রাসায়নিক মুক্ত উন্নত জাতের আম চলে যাচ্ছে রাজধানী ঢাকা, চট্রগ্রাম, পিরোজপুর, বগুড়া সহ আস পাশের বিভিন্ন জেলায়। এছাড়া আগামি সপ্তাহ থেকে যুক্তরাজ্যের বাজারে যাবে সাতক্ষীরা আম।
কৃষি বিভাগের সূত্র মতে, এবছর সাতক্ষীরা থেকে রাসায়নিক মুক্ত ২ শ' মেট্রিক টন আম বিদেশে রফতানি হবে। যুক্তরাজ্যের বাজারে রপ্তানির জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহায়াতায় ২৪৫ জন চাষীকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ১৪৫ হেক্টর জমিতে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় গাছে ব্যাগেজ পদ্বতিতে আম উৎপাদন করেছে। আগামি এক সপ্তাহ পর থেকে গাছ থেকে পর্যায় ক্রমে আম ছাড়িয়ে এসব আম বিদেশে রপ্তানি করা হবে।
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর খামারবাড়ি’র উপ-পরিচালক আব্দুল মান্নান জানান, চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরা জেলায় আমের আবাদ হয়েছে ৩ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে। যা গতবারের তুলনায় ৫০ হেক্টর জমি বেশি। আমের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ৫০ হাজার মেট্রিক টন। যা গত বছরের তুলনায় ১৫ হাজার মেট্রিক টন বেশি।
তিনি আরও জানান, গতবছর সাতক্ষীরা জেলা থেকে ২৩ টন আম যুক্তরাজ্যের বাজারে রফতানি হলেও এবছর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ শ' মেট্রিক টন। এই জন্য কৃষি বিভাগের মাধ্যমে যাছাই করে সুন্দর পরিস্কার দেখে সদর উপজেলার ১৫০ টি, কলারোয়া উপজেলার ১০০টি, দেবহাটায় ৪০টি ও তালা উপজেলায় ৮৭ টিসহ মোট ১০০ হেক্টর জমির ৩৭৭টি আম বাগানের ২২০ জন মালিকের ১৪ হাজার ৪৫১টি আম গাছ বিশেষ ভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে যুক্তরাজ্যের জন্য। যা আগামি সপ্তাহ থেকে আম পাড়া শুরু হবে।