দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে ভরা বর্ষাতেও মাছ ধরার গ্রামীণ উপকরণ ‘চাঁই’ বিক্রি কমে গেছে। চাঁই বাশের তৈরী যা স্থানীয় ভাষায় ডাইরকি বা ভুরঙ্গ নামে পরিচিত। এক সময়ের জনপ্রিয় এই উপকরণটির ব্যবহার এখন অনেক কমেছে। ভরা বর্ষাতে নদীনালা খালবিল যখন থই থই, তখন বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা মেলেনি চাঁই দিয়ে মাছ ধরার দৃশ্য। অথচ এক সময় এটিই ছিল এই উপজেলার মাছ ধরার প্রধান উপকরণ।
চিরিরবন্দরের ঢেলাপীর, তারাগঞ্জ, ভুষিরন্দর, কাচীনিয়া, যশাই ,কারেন্টহাট, রানীরবন্দর হাট ঘুরে দেখা গেছে, মাছ ধরার চাই বা ডাইরকি নিয়ে বসে আছেন বাঁশের তৈরির কারিগররা। বিক্রি কম হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তারা জানায়, এসব তৈরিতে আগের চেয়ে বেড়েছে খরচ। আগের মতো আর লাভ হয় না। নদী-নালা ও জমিতে পর্যাপ্ত পানি হলেও নেই কোন মাছের দেখা। এছাড়া দেশি মাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে। তাই আগের মতো আর বিক্রি হচ্ছে না।
গোয়ালডিহি ইউপির পূর্ব হাসিমপুর গ্রামের কারিগর গোরাচাঁদ জানান, চাঁই বা ডাইরকি তৈরিতে বাড়ির গৃহিণীসহ ছেলে-মেয়েরাও সহযোগিতা করে। বর্ষা মৌসুমকে সামনে রেখে এসব তৈরি করে থাকেন তারা। এসব তৈরিতে ছোট বড় প্রকারভেদে খরচ পড়ে ৫০ টাকা থেকে ২শত টাকা। আর তা বিক্রি হয় ২শত’ থেকে ৫শ’ টাকায়। কিন্তু দিন দিন কমে যাচ্ছে এর বিক্রি ।
গোরাচাঁদ বলেন, প্রতি বছর বর্ষার ভরা মৌসুমে চাঁই পাইকারি দামে কিনে, আমি বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করে তাকি। বাঁশের দাম বেশি হওয়ায় চাঁই বিক্রিতে আগের মত লাভ হয় না প্রতিটি ছোট বড় চাই বিক্রি করে ৪০ থেকে ৮০ টাকা করে লাভ হয়।
পাকেরহাটের শেলু মিয়া বলেন, বর্ষা মৌসুমে আমি ডাইরকি দিয়ে প্রতিদিন ২ থেকে ৩ কেজি মাছ ধরতাম, তা বিক্রি করতাম ৩ থেকে ৪ শত টাকায়। যা দিয়ে আমার সংসার চলতো, কিন্তু বর্তমানে খাল-বিল পানিতে ভরা থাকলেও দেখা মিলছেনা মাছের। তাই অন্য কাজ করে চলতে হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/১৫ জুলাই ২০১৭/হিমেল