যৌতুক দাবির ১ লাখ টাকা না পেয়ে আটকে রেখে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর ইউনিয়নের বংকুরা গ্রামের গৃহবধূ এক সন্তানে জননী তানজিলা আক্তারকে (২২) অমানুষিক শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্বামী ও শ্বশুড় বাড়ির লোকজনের নির্যাতনে অসুস্থ গৃহবধূ তানজিলা আক্তারকে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে থানা পুলিশ। এ ঘটনায় নির্যাতিত গৃহবধূ বাদি হয়ে স্বামী, ইউপি সদস্যা শাশুড়ি, শ্বশুড় ও দেবরসহ ৪ জনকে আসামি করে গৌরনদী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। তানজিলা বাটাজোর গ্রামের মৃত মো. মানিক সরদারের মেয়ে।
নির্যাতিতার মা মিনারা বেগম জানান, গত ৬ বছর আগে বংকুরা গ্রামের ইয়ার হোসেন বেপারীর ছেলে আরিফ বেপারীর সাথে সামাজিকভাবে তানজিলার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় মেয়ে জামাতা আরিফ বেপারীকে দেড় ভরি স্বর্ণালংকার দেয়া হয়। ২ বছর আগে আরিফকে একটি পিকআপ কেনার জন্য নগদ ১ লাখ টাকা যৌতুক দেয়া হয়।
চিকিৎসাধীন তানজিলা অভিযোগ করেন, গত ৬ মাস ধরে তার স্বামী ও শ্বশুড় বাড়ির লোকজন আরো এক লাখ টাকা যৌতুক এনে দেয়ার জন্য তাকে বিভিন্ন সময় চাপ সৃষ্টি করে। যৌতুকের টাকা এনে দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় স্বামী ও শাশুড়ি তানজিলাকে শারীরিক নির্যাতন করে ৪ মাস আগে তাকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। শাশুড়ি বাটাজোর ইউপির সদস্যা রেখা বেগম গত ২১ আগস্ট তাকে (তানজিলাকে) খবর দিয়ে স্বামীর বাড়ি নেয়। এ সময় যৌতুকের এক লাখ টাকা না পেয়ে স্বামী আরিফ বেপারী, শাশুড়ি রেখা বেগম, শ্বশুড় ইয়ার হোসেন বেপারী ও দেবর শরীফ বেপারীসহ শ্বশুড় বাড়ির লোকজন তাকে জিন্মি করে তালাকনামায় স্বাক্ষর নেয়ার চেষ্টা করে। এতে সে (তানজিলা) রাজি না হওয়ায় তার ওপর শনিবার গভীর রাত থেকে রবিবার দিবাগত গভীর রাত পর্যন্ত শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন চালায় তারা। খবর পেয়ে তার মা বিধবা মিনারা বেগম মেয়েকে উদ্ধার করে বাবার বাড়িতে নেয়ার জন্য গত রবিবার দুপুরে মেয়ে জামাতার বাড়িতে গেলে তাকেও আটকে রেখে তালাকনামায় সাক্ষর দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে তারা।
গৌরনদী মডেল থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম জানান, যৌতুকের দাবিতে স্বামী ও শ্বশুড় বাড়ির লোকজন গৃহবধূ তানজিলাকে আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন চালিয়েছে। খবর পেয়ে সোমবার ভোররাতে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে স্বামী ও শ্বশুড় বাড়ির লোকজন পালিয়ে যায়। এ সময় স্বামীর বাড়ি নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ তানজিলা ও তার মা মিনারা বেগমকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে পুলিশ।
এ ঘটনায় তানজিলার মা বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে ৪ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছে। মামলার আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে ওসি জানিয়েছেন।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার
