সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের বেলাভূমি পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা এখন পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে। বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে শারদীয়া দুর্গা উৎসব ও আশুরার ছুটিতে দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসা ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকদের উন্মাদনায় পুরো সৈকত জুড়ে আনন্দময় পরিবেশ বিরাজ করছে।
স্থানীয় রাখাইন মার্কেট, ঝিনুকের দোকান, খাবারঘর, চটপটির দোকানসহ পর্যটনমুখি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কেনাকাটার ধুম পরেছে। দেশী বিদেশী পর্যটকদের আগমনে সৈকতের কোথাও তিল ধারনের ঠাঁই নাই। তবে বৃহস্পতিবরে থেকে হোটেল মোটেলগুলো বুকিং রয়েছে। এমন অবস্থা আরো দুই এক দিন থাকাতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট হোটেল ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সৈকত সংলগ্ন নারিকেল বাগান, ইকোপার্ক, ইলিশপার্ক, জাতীয় উদ্যান, শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহার, সীমা বৌদ্ধ বিহার, সুন্দরবনের পূর্বাঞ্চল খ্যাত ফাতরার বনাঞ্চল, ফকির হাট, গঙ্গামতি, কাউয়ার চর, লেম্বুর চর, শুটকি পল্লী ও কুয়াকাটার জিরো পয়েন্টে শিশু কিশোর যুবক যুবতীসহ নানা বয়সী পর্যটকদের আগমনে আনন্দময় পরিবেশ বিরাজ করছে। স্থানীয় হোটেল মোটেল ব্যাবসায়ীরাও চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। পর্যটক ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় ট্যুরিষ্ট পুলিশের পাশাপাশি মহিপুর থানা পুলিশের বিভিন্ন পয়েন্টে টহল বাড়িয়েছে।
রাজশাহী থেকে আসা পর্যটক আল মামুন জানান, তরুণ সংঘ নামের ৫০ জনের একটি গ্রুপ বৃহস্পতিবার কুয়াকাটার উদ্দেশে রওনা হয়। শনিবার সন্ধ্যায় তারা কুয়াকাটা অবস্থান নেন। পরে একই হোটেলে রুম না পেয়ে বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন হোটেলে ওঠেন। রান্না করার স্থান না পাওয়তে তাদের রাস্তার ঢালে রান্না কতে হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
রাজশাহী গার্হস্থ্য আর্থনীতী কলেজের শিক্ষার্থী মোছা. উম্মে কুলসুম জানান, কুয়াকাটার সবদিক ঠিক আছে। কিন্তু রাস্তাটা খুবই খারাপ। সৈকতের অপরূপ দৃশ্য দেখে অসাধারণ লেগেছে।
ঢাকায় চাকরিত মো. ইব্রাহিম জানান, সব মিলিয়ে কুয়াকাটার পরিবেশ ভালই লেগেছে। এর আগেও তিনবার এখানে এসেছেন। হোটেলে সিট না পেয়ে এবার একটি রুমে আমরা সাত জন গাদাগাদি করে থাকতে হয়েছে।
কুয়াকাটা খাবার হোটেল 'ঢেউ'র পরিচালক অনোয়ার হোসেন আনু জানান, পর্যটকদের চাহিদা অনুযায়ী আমরা সামুদ্রিক মাছসহ উন্নতমানের খাবার পরিবেশনের চেষ্টা করছি। তবে পর্যটকদের ব্যাপক চাপ রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
কুয়াকাটা হোটেল ওয়েস্টার্ন এর পরিচালক মো.মিজানুর রহমন জানান, শারদীয়া দুর্গা উৎসব ও আশুরার ছুটিতে অগনিত পর্যটকদের সমাগম রয়েছে। তাদের আবাসিক হোটেলের একটি সিটও খালি নাই। এরপরও বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকরা বুকিং এর জন্য ফোনকল এবং অনলাইনে চেষ্টা করছে।
কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স এ্যাসোশিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মোতালেব শরিফ জানান, প্রচুর সংখ্যক পর্যটক আসেলও শীত মৌসুমে রেকর্ড সংখ্যক আগমন ঘটবে। এ অবস্থা আরো দুই একদিন থাকবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
ট্যুরিষ্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের এএসপি আব্দুল করিম জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে ট্যুরিষ্ট পুলিশসহ থানা পুলিশ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে টহল দিচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৭/হিমেল