বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এমপি বলেছেন, খুব অল্প সময়ে দিনাজপুরের আরেক দীঘীপাড়ার কয়লা ক্ষেত্রে কার্যক্রম শুরু করা হবে। এ কয়লা ক্ষেত্র থেকে বছরে ৪ মিলিয়ন টন কয়লা উত্তোলনের সম্ভবতা যাচাই ও কয়লা ক্ষেত্রটির উন্নয়নে ৪ হাজার কোটি টাকাও বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে নবাবগঞ্জ উপজেলার দিঘিপাড়া কয়লা ক্ষেত্র এলাকা পরিদর্শনে এসে দলারদরগা বাজারে নবাবগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের আয়োজনে এক পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে দিনাজপুর তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে মন্ত্রী সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ঠিকাদারেদের সাথে মতবিনিময় সভায় মিলিত হন।
তিনি বলেন, সম্ভবতা যাচাইয়ে ৬০টি পয়েন্ট নির্ধারণ করা হয়েছে। চুড়ান্তভাবে খনন কার্যক্রম শুরুর আগে ভূমি অধিগ্রহণসহ উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। কেউ যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সেদিকে নজর রেখেই দেশের জ্বালানী খাত সমৃদ্ধ করা হবে।
এর আগে শুক্রবার সকালে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিদর্শনকালে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নতুন ২৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন শুরু হবে। এর ফলে উত্তরাঞ্চলের বিদ্যুতের যে ঘাটতি তা পূরণ হবে।
এসময় বিদ্যুত জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণায়লয়ের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও দিনাজপুর-৬ আসনের সাংসদ শিবলী সাদিক, বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ, প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল হাকিম সরকার, দিনাজপুর তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী চৌধূরী নুরুজ্জামান, জার্মান ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশ প্রধান পরামর্শক শান্তুু চৌধুরীসহ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার দিঘীরপাড়া নামক এলাকায় ১৯৯৫ সালে ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের (জিএসবি) কয়েক বছরের অনুসন্ধানে আবিস্কৃত হয় দিঘীপাড়া কয়লা ক্ষেত্রটি। ২০১৫ সালের ২১ অক্টোবর বাংলাদেশ খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডি) ও বড় পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড (বিসিএমসিএল) এর মধ্যে এ নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তারা বড়পুকুরিয়া খনির অভিজ্ঞতায় দিঘীপাড়া কয়লা ক্ষেত্রের উন্নয়নের দায়িত্ব নিয়েছে। এ বছর ৬০টি পয়েন্টে বোরিং এর কথা জানায়। দিঘীপাড়া ক্ষেত্রটি থেকে উৎপন্ন কয়লায় ৪ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন সম্ভব এবং তা দিয়ে দেশের সৃষ্ট চাহিদা পূরণ হবে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের জ্বালানী বিভাগ দিঘীপাড়া কোল বেসিনের ২৪ বর্গ কি.মি. এলাকার কয়লার পরিমাণ নির্নয় ও কেন্দ্রীয় অংশে (১০-১১ কিমি) ভূগর্ভস্থ পদ্ধতিতে বছরে ৪ মিলিয়ন টন কয়লা উৎপাদন ক্ষমতার খনি উন্নয়নে বড়পুকুরিয়া খনি কর্তৃপক্ষকে অনুসন্ধান এবং সম্ভাবনা যাচাইয়ের অনুমোদন দেয়া হয়।
এছাড়াও দিনাজপুরে কয়লাভিত্তিক ২৫০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ছিল। নতুন প্রকল্প থেকে আগামী নভেম্বরে ২৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হলে এখান থেকে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।
বিডি প্রতিদিন/২৭ অক্টোবর ২০১৭/হিমেল