‘শ্বশুরবাড়ির লোকদের কথায় স্বামী আমার এ হাল করেছে। অন্য দশজন নারীর মতো আমি সংসার করতে চেয়েছিলাম। শুনেছি এখন নারী নির্যাতনের বিচার হয়। এখন তাই বিচার চাইতে থানায় এসেছি।’ স্বামীর হাতে নির্যাতনের স্বীকার হাসপাতালের বিছানায় কাতরানোর ১২দিন পর থানায় এসেছেন বিচার চাইতে গুরুদাসপুরের গৃহবধূ রেবেকা বেগম। যৌতুক না পেয়ে রেবেকার (৩০) পা ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে পাষন্ড স্বামী সেলিম প্রামাণিক (৩৫)। এ ঘটনায় আজ স্বামী সেলিম, শ্বশুর সেকেন্দার ও শ্বাশুরি তাছলিমা বেগমের বিরুদ্ধে গুরুদাসপুর থানায় অভিযোগ করেছেন ওই গৃহবধূ রেবেকা।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের প্রথম দিকে উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের ধারাবারিষা পশ্চিমপাড়ার আসমত আলীর মেয়ে রেবেকার সাথে পৌর সদরের চাঁচকৈড় কাচারী পাড়ার সেলিমের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় ১ লাখ ৮০হাজার টাকা যৌতুক দেয় রেবেকার পিতা আসমত। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে বিভিন্ন অজুহাতে রেবেকার বাবার কাছে আরো টাকার চাপ দেয়। এসব নিয়ে বিভিন্ন সময় মারপিট করে। ওই ঘটনায় গ্রাম্য শালিসে ওই স্বামী নির্যাতন না করা প্রতিশ্রুতিতে মিমাংসা হয়। সংসারের কথা ভেবে রেবেকা স্বামীর সংসারে ফিরে যায়। গত ২৮ ডিসেম্বর বেলা ১১টার দিকে রেবেকার হাত-পা বেঁধে জিআই পাইপ দিয়ে বেধড়ক পেটায় সেলিম। মারপিটের একপর্যায়ে লোহার সাবল দিয়ে বাম পা ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়। প্রতিবেশীরা রেবেকার বাবাকে খবর দিলে তিনি প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় তার মেয়ে রেবেকাকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করে। সে বর্তমানে চিকিৎসাধীনে রয়েছে।
নির্যাতিতা রেবেকার বাবা আছমত আলী জানান, মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে বেশ কিছু টাকা দেওয়া হয়েছে। এরপরও আমার মেয়ের পা ভেঙ্গে দিয়েছে। টাকা দিয়েও মেয়ের ভাঙ্গা পা দেখতে হয়েছে। সেলিমের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ দিলিপ কুমার দাস বলেন, পরিবারের সদস্যদের প্ররোচনায় সেলিম তার স্ত্রীকে অমানুষিক নির্যাতন করতেন বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে। সেলিমকে গ্রেফতার করার চেষ্টা করছে পুলিশ।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার