বরিশালের গৌরনদীতে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আধিপত্য বিস্তার ও অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় ছাত্রলীগ কর্মী জিহাদ আহত হওয়ার প্রতিবাদে এবং হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে আজ গৌরনদী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় পুলিশ ৪ জনকে আটক করেছে।
স্থানীয়রা জানান, আধিপত্য বিস্তার ও দলীয় অভ্যন্তরীণ বিরোধকে কেন্দ্র করে সরকারি গৌরনদী কলেজ ছাত্র সংসদের সদস্য হাসিব হোসেনের সাথে ওই কলেজের ক্রীড়া সম্পাদক আরিফ মিয়া গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এই বিরোধকে কেন্দ্র করে ইতিপূর্বে কয়েকবার হামলা-পাল্টা হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সবশেষ গত সপ্তাহে কলেজ সংসদের সদস্য হাসিবের সমর্থক রাশেদের নেতৃত্বে আরিফের সমর্থক নিরবকে মারধর করা হয়। এর জের ধরে কলেজ ছাত্রলীগের ক্রীড়া সম্পাদক আরিফের ছোট ভাই ছাত্রলীগ কর্মী জিহাদের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের ৩৫-৪০ কর্মী ও সমর্থক গত শুক্রবার রাতে গৌরনদী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় হাসিব সমর্থক দিপু হাওলাদার, উদয় কুন্ড ও সাদ্দামকে মারধর করে।
এ ঘটনার পরপরই জিহাদ ওই রাতে বাড়ি ফেরার পথে টিএন্ডটি অফিসের কাছে হাসিবের সমর্থক ছাত্রলীগের কর্মী সম্রাট সাগর ও সাদ্দামের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের ১৫-২০ নেতাকর্মী তাকে বেদম মারধর করে। গুরুতর আহত অবস্থায় জিহাদকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এদিকে জিহাদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ও হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবীতে ছাত্রলীগের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী সকালে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের গৌরনদী বাসস্ট্যান্ড অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করে। খবর পেয়ে গৌরনদী থানার ওসি হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে বিক্ষুব্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অবরোধ তুলে নেয়।
এরপর কলেজের সামনে অভিযান চালিয়ে ডিগ্রি পরীক্ষার্থী তারেক ভূঁইয়া, শাওন সরদার, ছাত্রলীগ কর্মী রবি তালুকদার ও চয়ন হাওলাদারকে আটক করে পুলিশ।
গৌরনদী থানার ওসি মনিরুল ইসলাম জানান, হামলার ঘটনায় জিহাদের বড় ভাই ছাত্রলীগ নেতা আতিক মিয়া বাদি হয়ে ১০ জনের নামোল্লেখ করে ছাত্রলীগের ১৫ নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলার আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এদিকে শনিবার বিকেলে উজিরপুর উপজেলা পরিষদ চত্তরে স্থানীয় এমপি তালুকদার মো. ইউনুনের সমর্থক ও উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান ইকবালের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষ হয়।
আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের সংঘর্ষে ওয়ার্ড কাউন্সিলর রিপন মোল্লা তার ভাই শ্রমিক লীগ নেতা শিপন মোল্লা ও আওয়ামী লীগ নেতা খবির হাওলাদার এবং সংঘর্ষ ছাড়াতে গিয়ে আরেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর হেমায়েত উদ্দিন হিমু আহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
এ ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগের এক সিনিয়র নেতা উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা করিয়ে দেওয়ার জন্য স্থানীয় নেতাতের নির্দেশ দিয়েছেন বলে উপজেলা আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানিয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার