বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী এ কে এম শাহজাহান কামাল বলেছেন, হায়নার দল মনে করেছিল বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে হত্যা করলেই দেশের পক্ষে কথার বলার আর কোন লোক থাকবে না, কিন্তু শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা সেই কালো রাতে দেশের বাইরে থাকায় তাদের (হায়নার দলের) উদ্যেশ্য বাস্তবায়ন হয়নি, বর্তমানে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। আজ বিকেলে জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শহরের আদর্শ সামাদ উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ বিষয়ে আলোকপাত করে আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরো উন্নত করতে পাঁচ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের শুরুতে দেশে কোন বিদ্যুত ছিল না, রাস্তা ঘাট ছিল না, কলকারখানা বন্ধ ছিল, কিন্তু এখন শেখ হাসিনা সেই দেশকে উন্নয়নের শিখরে নিয়ে গেছেন, এখন দেশে খাদ্যের কোন অভাব নেই। তাই সকল যড়যন্ত্র মোকাবেলা করে নেতা কর্মীদের নৌকার সমর্থনে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান মন্ত্রী।
শহরের আদর্শ সামাদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি গোলাম ফারুক পিঙ্কুর সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন সঞ্চালনা করেন। এসময় অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন, সংসদ সদস্য লায়ন এম এ আউয়াল, আব্দুল্লাহ আল মামুন, মো. নোমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি মাকছুদ কামাল, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা হারুনুর রশীদ ও ফরিদুন্নাহার লাইলী, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এম আলা উদ্দিন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের ও মিজানুর রহিম, আওয়ামী লীগ নেতা এম এ হাশেম, কাজী শহিদুল ইসলাম পাপুল ও আনোয়ার খান প্রমুখ।
এর আগে নিজ জেলা লক্ষ্মীপুরের সর্বস্তরের মানুষের অভিনন্দন ও ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য এ কে এম শাহজাহান কামাল। লক্ষ্মীপুর থেকে আওয়ামী লীগের এই প্রথমবারের মতো বর্তমান সরকারের মন্ত্রী হওয়ায় তাকে ব্যাপক আয়োজনে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন, স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা, জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন পেশাজীবী ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ একের পর এক অভিনন্দন ও ফুলেল শুভেচ্ছা জানান মন্ত্রীকে।
পথে পথে তোরণ, হাতে হাতে ফুলের মালা, পৌর শহরের রাস্তার দুই ধারে দাঁড়িয়ে ছিলেন নানা শ্রেণি পেশার মানুষ। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছেড়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে গেছেন ব্যবসায়ীরাও। অপেক্ষা সরকারের মন্ত্রী পরিষদের নতুন সদস্য এ কে এম শাহজাহান কামালকে নতুনভাবে দেখা এবং ফুলেল শুভেচ্ছা জানানোর জন্য।
দুপুর আড়াইটার দিকে শতাধিক গাড়ী বহর নিয়ে স্থানীয় সার্কিট হাউজে এসে পৌঁছান মন্ত্রী। খাওয়া ধাওয়া শেষে বিকাল ৪ টায় মুল সভামঞ্চে উঠেন তিনি।
স্থানীয়রা জানান, সব শ্রেণির মানুষ তাকে যেভাবে গ্রহণ করেছে এর আগে লক্ষ্মীপুরের স্থানীয় কোনো নেতাকে এভাবে গ্রহণ করা হয়নি। শুভকামনা করেছে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নতুন এ মন্ত্রীর জন্য।
এদিকে মন্ত্রীর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানকে ঘিরে অনুষ্ঠানের আশে পাশের বিদ্যালয়ে পাঠদান ব্যাহত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় আদর্শ সামাদ উচ্চ বিদ্যালয় ও লক্ষ্মীপুর টাউন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থীদের পাঠদান না করে বেলা ১১ টার দিকে ছুটি দিয়ে দিলেন শিক্ষকরা। বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান মন্ত্রীর অনুষ্ঠানের মাইকের আওয়াজের কারণে কিছুই শোনা যাচ্ছিল না, তাই ক্লাস হবেনা জানিয়ে শিক্ষার্থীদেরকে ছুটি দেওয়া হয়েছে বলে জানান তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই দুই বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, দুই-একটি বিষয়ে ক্লাস নিয়ে শিক্ষার্থীদের ছুটি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, রাজনৈতিক অনুষ্ঠানগুলো স্কুল চলাকালীন কোমলমতি শিশুদের আঙ্গিনার বাইরে করা হলে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হবে না বলে মনে করছেন সচেতন মহল। এ বিষয়ে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন এমনটিই প্রত্যাশা সবার।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার