নাটোর নবাব সিরাজ উদ দৌলা সরকারী কলেজের একাদশ শ্রেনীর ছাত্রী ফারিয়া ইয়াসমিন তনু অপহরণের ২৪ দিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত তাকে উদ্ধার বা এ ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এদিকে মেয়েকে খুঁজে না পাওয়ায় ফারিয়া ইয়াসমিন তনুর অভিভাবকরা চরম উৎকন্ঠার মধ্যে দিয়ে সময় পার করছে।
অপহৃতা সেই স্কুল ছাত্রী বেঁচে আছে কি না বা তাকে উদ্ধার করা সম্ভব কি না তা নিয়ে অপহৃতার পিতা-মাতা এবং পরিবারের মধ্যে হতাশা দিন দিন ক্রমেই বেড়ে চলেছে। অপহৃতার পরিবারের অভিযোগ অদৃশ্য কারণে পুলিশ এ বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। একটি প্রভাবশালী মহল বিষয়টিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার পাঁয়তারায় লিপ্ত রয়েছে বলেও তাদের অভিযোগ।
এলাকাবাসীর অভিযোগ পুলিশি নিস্ত্রিয়তার কারণে ১৭ বছর বয়সী কলেজ ছাত্রীকে যেমন উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি । তেমনি ঘটনার সাথে জড়িত অপহরণকারীরা প্রকাশ্যে এলাকায় ঘুরে বেড়ালেও তাদের আটক করছে না পুলিশ ।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায় , নাটোর নবাব সিরাজ উদ দৌলা সরকারী কলেজের একাদশ শ্রেনীর ছাত্রী ফারিয়া ইয়াসমিন তনু সদর উপজেলার দস্তানাবাদ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি সদস্য আব্দুল হাকিমের বাসায় থেকে পড়াশোনা চালিয়ে আসছিল । গত ১ লা জানুয়ারী বিকেল সাড়ে ৫ টায় নানার বাসা থেকে নিজ বাসা বাগাতীপাড়া উপজেলার জামনগর ইউনিয়নের পুকুর পাড়া গ্রামে যাওয়ার পথে দস্তানাবাদ গ্রামের জনৈক কছির মিয়ার বাসার সামনের পাকা সড়কের উপরে বখাটে নাঈম ইসলাম , মোঃ আলান এবং মোঃ খালেকসহ অঞ্জাতনামা ৩/৪ জন সন্ত্রাসী অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে এবং মুখে গামছা পেঁচিয়ে সিএনজি অটো রিকশায় তুলে অঞ্জাত স্থানে তুলে নিয়ে যায় ।
ঘটনার পরের দিন ২ জানুয়ারী অপহৃতার নানা আব্দুল হাকিম বাদী হয়ে নাটোর সদর থানায় তিনজনকে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি অভিযোগ দাখিল করেন । পুলিশ নানা ভাবে গড়িমসি করে মামলা এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে ঘটনার ৭ দিন পরে ৯ জানুয়ারী । আসামীরা প্রভাবশালী হওয়ায় ঘটনার ২২ দিন পেরিয়ে গেলেও একজন আসামীকেই গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ ।
অপহৃত তনুর বাবা মা অভিযোগ করেন , অপহরণকারীদের সম্ভাব্য লুকিয়ে থাকার স্থান গাজীপুর চৌরাস্তায় নাঈম ইসলামের ভগ্নিপতির বাসায় অবস্থানের খবর নিশ্চিত হয়ে জানানোর পরও পুলিশ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি । পুলিশের নিস্ক্রিয়তার কারণে মামলার অভিযুক্ত আসামীরা প্রকাশ্যে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং মামলা প্রত্যাহারের জন্য হুমকি ধামকি দিচ্ছে । আসামীরা সন্ত্রাসীরা প্রকৃতির হওয়ায় এবং পুলিশের নিস্ত্রিয় ভূমিকার কারণে চরম নিরাপত্তাহীনতা এবং উৎকন্ঠার মধ্যে দিনানিপাত করছে তনুর পরিবার।
এ ব্যাপারে মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই আলী আকবর জানান, তনুকে উদ্ধারে আমরা সব ধরনের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে । অপহ্রত শিক্ষার্থীকে উদ্ধার ও অপহরণকারীদের গ্রেফতারে বিভিন্ন স্থানে সন্ধান চাওয়া হয়েছে। অপহরণকারীর ব্যবহৃত কল রেকর্ড ও সিডি চাওয়া হয়েছে। খুব শীঘ্রই অবস্থান নিশ্চিত হওয়া যাবে। সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে । আসামীরা আত্মগোপনে থাকায় গ্রেফতারে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে বলে জানান তিনি। খুব তাড়াতাড়ি তনুকে উদ্ধার করা সম্ভব হবে।
বিডি-প্রতিদিন/ আব্দুল্লাহ সিফাত তাফসীর