গ্রাম বাংলরে ঐতিহ্য নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার খবরে সকাল থেকেই সুগন্ধা নদীর দু'পাড়ে কয়েক হাজার দর্শক উচ্ছ্বাস নিয়ে মধুর অপেক্ষা করছে। নারী, শিশু-বৃদ্ধা সবাই এক কাতারে নদীর তীরে অপেক্ষা করছে নৌকাবাইচ উপভোগ করার জন্য। আজ দুপুর সাড়ে ১১টায় নদীর সুতালরি প্রান্ত থেকে নৌকাবাইচ শুরু হয়ে চার কিলোমিটার দূরবর্তী ৫ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু পর্যন্ত গিয়ে আবার পৌর মিনি পার্ক এলাকায় এসে শেষ হয়।
এসময় নৌকাবাইচ উপভোগ করার জন্য নদীর দুই তীরে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়। বাংলাদেশ নিন্ম আয়ের দেশ থেকে নিন্ম মধ্যম আয়ের দেশের স্বীকৃতি লাভ করা ঝালকাঠি জেলা প্রশাসনের আয়োজন করে। ঢাক-ঢোলের তালেতালে গ্রাম বাংলার গান আর বৈঠার ছন্দ মাতিয়ে তুলেছিল জলের ঢেউকে। আর সেই ছন্দে তাল মিলিয়ে তীরে হাজার হাজার শিশু-কিশোর-কিশোরী থেকে শুরু করে বয়োবৃদ্ধ পর্যন্ত নেচে-গেয়ে এ নৌকাবাইচ উপভোগ করেছেন।
প্রধান অতিথি হিসেবে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা উপভোগ ও বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন করেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার মো. জোবায়েদুর রহমান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সরদার মোঃ শাহআলম, অধ্যক্ষ প্রফেসর শাহ আলম মজুমদার, জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খান সাইফুলাহ পনির, পৌর মেয়র লিয়াকত আলী তালুকদার প্রমুখ। এসময় বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী,জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ, শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
নৌকাবাইচ প্রতিযোগীতায় ঝালকাঠি ঝালকাঠি জেলা প্রশাসন দল প্রথম স্থান ও ঝালকাঠি পৌরসভা দল দ্বিতীয় হয়। মোটা ৪টি নৌকা এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। অপর দল হল ক্রীড়া সংস্থা ও ঝালকাঠি সদর উপজেলা প্রশাসন। নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা আয়োজন করায় আয়েজকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ।
বাইচ শুরু আগে সকাল থেকে সুগন্ধা নদীর পাড়ে ও নৌকা, ট্রলারে মানুষে ভরে যায়। শুধু ঝালকাঠিই নয় আশপাশের কয়েকটি জেলা থেকেও হাজার হাজার বিনোদন প্রেমীরা নৌকাবাইচ দেখতে এসেছিল। নৌকা বাইচকে কেন্দ্র করে তীরবর্তী এলাকায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা নানা-পসরা সাজিয়ে বসেছিল।
বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও খেলাধুলায় নদ-নদীর উপস্থিতি প্রবল এবং নৌকাবাইচ এদেশের লোকালয় ও সংস্কৃতির এক সমৃদ্ধ ফসল।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার