উড়োজাহাজের অনলাইন টিকিট বুকিং প্ল্যাটফর্ম ফ্লাইট এক্সপার্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দিশাহারা হয়ে পড়েছেন দেশের ট্রাভেল এজেন্টরা। ছোট ও মাঝারি টিকিট বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর কেউ কেউ দেউলিয়া হয়ে পড়েছেন। কেউ সম্পত্তি বিক্রি করে যাত্রীদের জন্য নতুন প্লেন টিকিট কিনছেন। কেউ গা ঢাকা দিয়েছেন। পুলিশের কাছে ভুক্তভোগী এজেন্টদের দেওয়া গোপনীয় নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে- ফ্লাইট এক্সপার্ট কেলেঙ্কারিতে এখন পর্যন্ত ৪৭ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২০০-এর বেশি এজেন্ট। সংশ্লিষ্টরা জানান, এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে পুরো খাতে। যাত্রীসহ এজেন্টদের মধ্যে আস্থাহীনতা কাজ করছে। ক্ষতিগ্রস্ত কয়েক ট্রাভেল এজেন্ট বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ফ্লাইট এক্সপার্টের সঙ্গে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল। কোম্পানিটি আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহন অ্যাসোসিয়েশন (আইএটিএ) নম্বর ছাড়াও অন্য কয়েকটি কোম্পানির আইএটিএ নম্বর ব্যবহার করে টিকিট কাটত। এর মধ্যে আছে মক্কা ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস, সোমা ইন্টারন্যাশনাল, হাজী এয়ার ট্রাভেলস ইত্যাদি। ফ্লাইট এক্সপার্ট বন্ধ হওয়ার খবরে এ কোম্পানিগুলোর কেউ কেউ টিকিট রিফান্ড করে টাকা তুলে নেওয়া শুরু করে। বিপাকে পড়েন ট্রাভেল এজেন্টরা।
ইউনিয়ন ট্রাভেলস লিমিটেডের পরিচালক মোহাম্মদ বিন মোস্তফা বলেন, আমার ২৫ লাখ টাকার টিকিট ছিল। এখন পর্যন্ত নিশ্চিত ক্ষতি হয়েছে ১৫ লাখ টাকা। এই টিকিটগুলো নতুন করে কিনে যাত্রীদের দিতে হয়েছে। বাকি ১০ লাখ টাকার টিকিটে যাত্রীর নামের রেকর্ড (পিএনআর) এখনো দেখাচ্ছে। এগুলো বাতিল হলে ক্ষতি আরও বাড়বে। টাকা উদ্ধারের প্রক্রিয়াটি আদালতের ওপর নির্ভর করছে। নিজের গাড়ি বিক্রি করে, এফডিআর ভেঙে এবং বাচ্চাদের ভবিষ্যতের জন্য জমা করা সঞ্চয়ের অর্থ ভেঙে টিকিটের ব্যবস্থা করতে হয়েছে। ক্রেতার আস্থা ধরে রাখতে যা করা দরকার করেছি। আমার জানামতে আরও কয়েক এজেন্টের ৪০ ও ৭০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। কেউ কেউ দেউলিয়া হয়ে পড়েছেন। ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে এখন পর্যন্ত সরকারের তরফ থেকে কোনো আশ্বাস পাইনি।
সরকার ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলসের মালিক বিপুল সরকার বলেন, আমার তিন লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এখনো আমার টিকিটগুলোর পিএনআর পাইনি। অনলাইন ট্রাভেল এজেন্ট পরবর্তী প্রজন্মের জন্য ভালো একটি প্ল্যাটফর্ম। বিশ্বের অন্য দেশে ওটিআই দিয়েই ব্যবসা হচ্ছে। এই দুর্ঘটনায় ওটিআইর ওপর আস্থা কমে যাচ্ছে।