দিনাজপুরে মুকুলে মুকুলে ভরে গেছে লিচুর বাগান। বাগানগুলোয় এখন মুকুলের মৌ মৌ গন্ধ। আর এই মৌ গন্ধে মৌমাছিরা এগাছ থেকে ওগাছে উড়ে সংগ্রহ করছে মধু। সুস্বাদু, মিষ্টি ও লোভনীয় এ মধু মৌমাছির মাধ্যমে আহরণ করছেন মৌ-চাষীরা।এতে বাগানী ও মৌ-চাষী উভয়ই লাভবান হচ্ছেন।
লিচু বাগানে মৌমাছির বাক্স বসিয়ে মধু আহরন করছেন দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে ৭ জন মৌচাষী। এসব ভ্রাম্যমাণ মৌ-চাষিরা লিচুগাছের তলায় বাক্স বসিয়ে মুকুল থেকে মধু সংগ্রহ করছেন। মৌচাষীরা মধু সংগ্রহ করে লাভবান অন্যদিকে মৌমাছির মাধ্যমে মুকুলের পরাগায়ন ঘটায় লিচুর বাম্পার ফলনের আশা বাগানীদের। এতে বেকারত্ব যেমন দূর হচ্ছে। তেমনি লিচুর ফলন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবার এ মধু যেমন খাটি, তেমনি সুস্বাদু। মানের দিক থেকেও উন্নত হওয়ায়, তাই এর চাহিদাও বেশী।
চিরিরবন্দরের পুনট্টি ইউপিতে চক মুসা গ্রামের বিলপাড়ার আলহাজ্ব মোজাহার আলীর ৪ বিঘা জমিতে ৩টি লিচু বাগান আছে। টাঙ্গাইল থেকে আসা ৭ জন মৌচাষি ছোট-বড় বিভিন্ন বাক্স বসিয়ে এই বাগানে বৈজ্ঞানিক উপায়ে মৌমাছি দিয়ে মধু সংগ্রহ করছেন।
ওই লিচু বাগানে আসা মৌচাষী দলের একজন টাঙ্গাইল জেলার ভুয়াপুরের পাঁচতেল্লা গ্রামের দুলাল তালুকদার। তিনি জানান, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনে (বিসিক) মৌমাছি প্রকল্পের ওপর প্রশিক্ষণ নিয়ে মৌচাষ শুরু করেন। প্রতি মৌসুমে বিভিন্ন জেলা থেকে মধু সংগ্রহ করছেন। এ লিচু বাগানে মৌমাছির বাক্স রয়েছে ২৬০টি। এখানে ৬/৭দিনের মধ্যে বাক্সগুলো থেকে মধু সংগ্রহ করা হয়। প্রতি সপ্তাহে অন্তত ১২ মণেরও বেশি মধু সংগ্রহ করা হবে। তবে মুকুলের উপর নির্ভর করবে মধুর পরিমাণ।
তিনি জানান, চলতি মৌসুমে এ বাগান থেকে ১০০ মণেরও বেশি মধু সংগ্রহ করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। প্রতিমণ মধু বিক্রি হয় ৭/৮ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ মধু দেশের এপি কোম্পানীতে দেয়া হয়।
বাগান মালিক আলহাজ্ব মোজাহার আলী জানান, বাগানে মৌমাছি যতবেশি আসবে, তত পরাগায়ন ঘটবে। এতে লিচুর ফলনও বেশি হবে।
চিরিরবন্দর উপজেলার হরনন্দপুর গ্রামের প্রভাষক আফছার আলী খান বলেন, প্রতি লিচু মৌসুমে আমি এখান থেকে পরিবারের জন্য মধু কিনে নিয়ে যাই। এখানে খাঁটি মধু পাওয়া যায়।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মাহমুদুল হাসান জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৫১০ হেক্টর জমিতে বোম্বাই, চায়না থ্রি, কাঠালী, মাদ্রাজীসহ নানাজাতের লিচুর চাষ হয়েছে। সুষ্ঠুভাবে পরাগায়ন ঘটলে ২০/৩০ভাগ লিচুর ফলন বেশি পাওয়া যাবে। এতে কৃষক ও মৌ-চাষিরা লাভবান হয়।
বিডিপ্রতিদিন/ ই জাহান