পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় প্রচণ্ড তাপদাহে কৃষিক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। খাল-বিল-পুকুর শুকিয়ে তলার মাটি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। মাঠ-ঘাট আর বিল সব ধুসর, বিবর্ণ হয়েছে। নিরাপদ পানির অভাবে বিপন্নের শঙ্কায় পড়েছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকসহ সাধারণ মানুষ। আশপাশে দূরের কোথাও থেকে গভীর নলকূপের পানি সংগ্রহ করলেও রান্না, গোসল কিংবা ব্যবহারের পানির জন্য চলছে হাহাকার। দীর্ঘ খরা আর প্রচন্ড তাপদাহে এ জনপদের মানুষ এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শতকরা ৮০টি খাল কিংবা ব্যক্তিগত পুকুর এখন পানিশুণ্য হয়ে আছে। কোন কোন পুকুরের তলদেশে খানিকটা পানি থাকলেও তা এখন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। কৃষকসহ সাধারণ মানুষ তাদের নিত্যদিনের ব্যবহারের পানি পর্যন্ত পাচ্ছে না। এ অবস্থা উপজেলার সবকটি ইউনিয়ের। সব যেন খাঁ খাঁ করছে।
এদিকে পানি সঙ্কটে ধান ও গাছ সঠিকভাবে বেড়ে উঠতে না পারায় রোগবালাই বৃদ্ধিসহ ফলন কম হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে বলে কৃষিবিদদের এমন ধরানা। এছাড়া নিরাপদ পানির সংকটে জলবসন্ত, জ্বর, ডায়রিয়া, টাইফয়েডসহ পানিবাহিত বিভিন্ন রোগব্যাধির প্রকোপ বেড়েই চলছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
কৃষক অহিদুল জানান, গবাদিপশু মাঠ ছেড়ে পানি খাওয়ার জন্য দৌড়ে ছুটে আসে বাড়ির পুকুরের দিকে। গবাদিপশু নিয়েও তারা পড়েছেন চরম বিপাকে। এছাড়া এ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বহু চাষী হাইব্রিড ধানের আবাদ করেছে। লকলক করে বেড়া ওঠার পরে ধান পাকার আগেই ক্ষেত ফেটে চৌচির হয়ে গেছে।
অপর এক কৃষক আলতাফ শিকদার জানান, স্থানীয় প্রভাবশালীরা মাছ ধরার জন্য খাল থেকে লবন পানি উঠিয়েছে। এর ফলে তিনি ক্ষেতে সেচ দিতে পারেনি। ক্ষেতের মাটি ফেটে একেবারেই চৌরির হয়ে গেছে।
উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো.মশিউর রহমান জানান, বোরো আবাদের জন্য যে পানি দরকার তা খাল থেকে নেওয়া হয়েছে। এখন আউশ আবাদে কৃষকদের বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করতে হবে। এ উপজেলার খালগুলো আরো গভীর করা প্রয়োজন। তাহলে আগামী দিনগুলোতে বেশি পরিমাণ পানি থাকতো। এতে করে কৃষকরা উপকৃত হবেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিনময় হাওলাদার জানান, প্রচণ্ড গরমে সাধারণত বৃদ্ধ ও শিশুরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। এজন্য বেশি পরিমাণ পানি ও রোদে সাধারণ মানুষের সর্তকতা অবলম্বন করতে আহ্বান জানান তিনি।
বিডি প্রতিদিন/২৭ এপ্রিল ২০১৮/হিমেল