বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার তলিগাতী ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির অবস্থা বেহাল। শুধু ভবনই নয় অযত্ন অবহেলায় ধ্বংস হয়ে গেছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির সকল জরুরি রেকর্ড, ফাইল, আসবাবপত্র। চিকিৎসায় ব্যবহৃত মূল্যবান অস্ত্র বা যন্ত্রপাতিও ভাল নেই। এখন ভরসা শুধু জোড়া-তালি দেওয়া একটি টেবিল ও একটি ভাঙা চেয়ার।
ওই চেয়ারটিতে বসে গর্ভবতী, প্রসূতি ও শিশুদের চিকিৎসা দিচ্ছেন এই কেন্দ্রের ভিজিটর লাভলীয়া খাতুন। তবে তার ভাষায়, ‘এখন আর এখানে কাঙ্খিত চিকিৎসা সেবা দেওয়া যাচ্ছেনা। সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় চিকিৎসা সম্পর্কিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে মাত্র। এক সময় এখানে ডেলিভারীও করানো হতো।
তেলিগাতী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোরশেদা আক্তার বলেন, প্রায় এক যুগ ধরে এই স্বস্থ্যকেন্দ্রটি ব্যবহারের অনুপযোগী। ডাক্তার (স্যাকমো) থাকেন না। চেয়ারম্যান ক্ষোভের সাথে আরো বলেন, ১২ হাজার লোকের জন্য দুটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র তার একটির ভবন প্রায় একযুগ ধরে পরিত্যাক্ত। কর্তৃপক্ষের অবহেলায় ধ্বংস হয়ে গেল কয়েক লাখ টাকার মালামালও।
জানা গেছে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রী পরিষদের সদস্য শেখ আব্দুল আজিজ তার নিজ গ্রাম তেলিগাতীতে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি স্থাপন করেছিলেন। প্রতি মাসে এখানে ২শ’ থেকে ৪শ’ মা ও শিশু চিকিৎসা সেবা পেয়ে থাকেন। কিন্তু কেন্দ্রটিতে এখন কাঙ্খিত চিকিৎসা তো দূরের কথা রোগীদের জন্য এক মিনিট বসার ব্যবস্থাও নেই।
২-৩ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে চিকিৎসা নিতে আসা ক্লান্ত গর্ভবতী পলি বেগম, সাথী বেগম ও আমেনা বেগম বলেন, দাঁড়িয়ে থেকেই সেবা নিতে হয়। এছাড়াও রয়েছে সাপ আতঙ্ক। ভবনটির বিভিন্ন কক্ষে নাকি বসতি গড়েছে বিষধর অনেক সাপ।
কেন্দ্রটি সম্পর্কে স্থানীয়দের অভিযোগ, এখানে উপসহকারি মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো) ও ভিজিটরসহ ৪ জন কর্মকর্তা কর্মচারি থাকার কথা। তাদের জন্য আবাসিক ভবনও রয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে স্যাকমো’রা এখানে থাকেন না।
এ সম্পর্কে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রেবেকা খাতুন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এ বিভাগে জনবল সংকটও রয়েছে। নতুন ভবন না হওয়া পর্যন্ত বিকল্প কোন স্থানে চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যাওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/২৯ এপ্রিল ২০১৮/হিমেল